বাংলাদেশ কি আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঝুঁকি নিবে?

অনেক সমীকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ দলের প্ল্যান-প্রোগ্রাম। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টম্যাচ। এ ম্যাচে জয় তো বটেই, নিজেদের পারফরম্যান্সের উন্নতি ঘটানো যাবে সেটাই আলোচ্য বিষয়। নতুন কোচিং স্টাফ স্কোয়াডেও রয়েছে নতুনদের প্রতি নজর। দুর্বলতম এক দলের বিপক্ষে ম্যাচ, তাও আবার নিজ মাটিতে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার দারুণ সময় এটা। কিন্তু বাংলাদেশ কি সে ঝুঁকি নিতে পারবে?

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সর্বশেষ ম্যাচ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সেটাতে ৬৪ রানে জিতে বাংলাদেশ। সিরিজটাতেই জিতেছিল সাকিব অ্যান্ড কোং। গত বছরের শেষের দিকের কথা। এরপর নিউজিল্যান্ড সফরে যথারীতি হার। এক ম্যাচ না খেলে ফিরে আসার ঘটনাটাও মনে আছে সবার। ফলে আফগানদের বিপক্ষে নতুন একটা শুরু চায় বাংলাদেশ। যেখান থেকে অন্য এক সূচনার অপেক্ষা। বাংলাদেশ দল নতুন কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর অধীনে কোচিং করে চলছে। যদিও সবে শুরু। খেলোয়াড়দের সত্যিকার অর্থেই চিনতে পারা, খেলোয়াড়রাও কোচের চিন্তাভাবনা বুঝে এগিয়ে যাওয়ার যে পর্ব সেটাতে ক্ষাণিকটা সময় লাগবে।

এমনি মুহূর্তে আফগানদের বিপক্ষে টেস্টম্যাচটা আসলেই চ্যালেঞ্জিং। কারণ স্পিনে আফগানরা অনেক এগিয়েছে। পেস অ্যাটাকও মন্দ নয়। সমস্যা তাদের একটাই, পাঁচ দিনের টেস্টম্যাচ। এ দীর্ঘ সময় নিজেদেরকে মাচে ধরে রাখতে পারা। এখানেই অ্যাডভান্টেজ বাংলাদেশের। তবে এটাও ঠিক দীর্ঘ একটা সময় পার করে আবারও টেস্ট আঙিনায় ফিরছেন তারা। তবে এটা ঠিক গ্যাপটা দীর্ঘ হলেও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই দলে। অল রাউন্ডার মেহেদি হাসান জানান, ‘প্রতিপক্ষ যে-ই হোক না কেন। খেলাও যেখানেই হোক। চ্যালেঞ্জটা আমরা নিতে প্রস্তুত।’

তিনি বলেন, ‘আসলে প্রতিটা ম্যাচই চ্যালেঞ্জ। প্রতিপক্ষ ছোট-বড় বলে কোনো কথা না। কারণ টেস্ট ক্রিকেট সেশন বাই সেশনের খেলা। এতে যারাই ভালো খেলবে তারাই জিতবে। কিন্তু তারপরেও আমরা কিন্তু ওদের থেকে অনেক এগিয়ে আছি; অভিজ্ঞতার দিক থেকে। তা ছাড়া হোম কন্ডিশন। এরপরও বলব, যতই এগিয়ে থাকি, যতই অভিজ্ঞতা থাকুক আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে, আমাদের সবাইকে পারফর্ম করতে হবে। যার যার জায়গায় নিজেদের কাজগুলো সঠিকভাবে করতে হবে।’

আফগানরা ওয়ানডেতে ভালো, টি-২০ ক্রিকেটে তো বাংলাদেশেরও ওপরে র‌্যাঙ্কিংয়ে। এবার টেস্ট! এখাকার বাস্তব চিত্রটা এখনো দেখা হয়নি। তবু আত্মবিশ্বাস আছে টিম বাংলাদেশের। যে সূচনা থেকে ফ্রন্টফুটে থেকেই তারা খেলতে পারবে প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। মিরাজ বলেন, ‘আমরা ডমিনেট করে খেলার চেষ্টা করব। সে রকমই কাজ করছি।’

দিন শেষে আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি ওরা কিন্তু আমাদের বিপক্ষে ওই রকম কিছুই করতে পারবে না। তারপরেও খেলায় কিন্তু হার-জিত থাকবে, ভালো সময়-খারাপ সময় থাকে। আমরা যেন ভালো ক্রিকেট খেলি এবং আমরা যেন প্রমাণ করি যে না ওদের চেয়ে ভালো দল।’

যদিও আফগানদের স্পিন ভালো। মিরাজ মানছেনও ওদের পারফরম্যান্সের ব্যাপারে। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলারদের অভিজ্ঞতা কিন্তু অনেক বেশি। বিশেষ করে সাকিব। অন্তত ১৩-১৪ বছর ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন, সাকসেসফুল প্লেয়ার, ওয়ার্ল্ড ক্লাস বোলিং-ব্যাটিং। তাইজুল ভাই হয়তো আর একটা উইকেট পেলে এক শ’ উইকেট হবে। আমারও প্রায় ৩-৪ বছরের অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে। ওভারঅল বলব ওদের চেয়ে অন্তত এ স্থানে আমরা এগিয়ে।’

প্রতিপক্ষরা ওয়ানডে-টি-২০ ক্রিকেটে ভালো খেলেন এটা মানছেন মিরাজ। কিন্তু ওই দুইয়ের সাথে টেস্টের কিন্তু বিস্তর ফারাক রয়েছে। যা বোলিংয়েও আছে। শর্টার ভার্সনে বোলাররা ফোর্স করে উইকেট আদায় করে নেন। কিন্তু টেস্টে কী অমন সুযোগ আছে? অফুরন্ত সময়। ব্যাটসম্যানরা দেখে শুনে খেললে বোলারদের দুর্বলতা বুঝে অ্যাটাক করলেই হয়ে যাবে।’

বাংলাদেশ দল এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে মিরপুর শেরেবাংলায়। এরপর আগামী ১ সেপ্টেম্বর রওয়ানা হয়ে যাবে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। আসল প্রস্তুতি ওখানেই হবে।

Share this post

scroll to top