বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ডেঙ্গু ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে এখন সবকিছুকেই ‘গুজব’ বলে চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির নীতিনির্ধারক বলেন, ‘কোনটা গুজব? ডেঙ্গু মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এটা? মহিলাদের প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করা হচ্ছে এটা? শিশুদের প্রতিনিয়ত নির্যাতন করা হচ্ছে এটা? শেয়ারবাজার থেকে গত দুই সপ্তাহে ২৭ হাজার কোটি টাকা লুট করা হয়েছে এটা? ব্যাংক লুট করে খালি করে দেয়া হয়েছে এটা? গুম-খুন-হত্যা করা হচ্ছে এটা? নাকি নির্বাচন কমিশন থেকে সংবিধান লংঘন করে হজ পর্যবেক্ষণে গেছে এটা গুজব? গুজব আসলে কোনটা?’
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বারবার বাধাগ্রস্ত করার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা নাসির উদ্দিন হাজারীর সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় প্রতিবাদী যুব সমাবেশে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, শাহ মোহাম্মাদ নেছারুল হক ও সাবিরা নাজমুল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
খসরু বলেন, ‘সরকারের কাছে তো সবকিছু গুজব বলে উড়িয়ে দেয়া ছাড়া কোনও পথ নেই। তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যর্থ হওয়ার কারণ হচ্ছে তারা আজকে যাদেরকে দিয়ে ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করা সম্ভব নয়। দেশের মালিক হয়েও জনগণ আজ আর দেশের মালিক নাই।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বলছে বিএনপি’র অফিস নাকি গুজবের ফ্যাক্টরি। সমস্যাটা হচ্ছে যারা আজকে জনগণকে বাইরে রেখে উন্নয়নের নামে ক্ষমতা দখল করেছে তারা জনগণের সম্মুখীন হতে পারছেন না। তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। জনগণের কাছে তারা জবাবদিহি করতে চায় না। কাজেই দেশে যে প্রবল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এই সমস্যার সমাধান তারা কোনোভাবেই দিতে পারবে না। সেটির জন্য তারা ‘গুজব গুজব’ বলে সব কিছু চালিয়ে যেতে চাচ্ছে।’
কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপি সরকারের সাবেক এই বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশনেত্রীর মুক্তি বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ এখন একবাক্যে চাচ্ছে। আমি শুধু এটুকুই বলবো তাঁর মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আশা করা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি নির্যাতিত নেতারা যেভাবে গণআন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে বেগম জিয়ার মুক্তিও একই প্রক্রিয়া হবে। তাঁর মুক্তি আন্দোলনের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ আজকে সেটির জন্য প্রস্তুত আছে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা উত্তরবঙ্গে যেখানেই ত্রাণ বিতরণের জন্য গিয়েছি সেখানেই মানুষের মনের অবস্থা পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে। সবাই বেগম জিয়ার মুক্তি চায়। এই কার্যক্রমে তারা বেগম জিয়াকে পাশে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সেখানে যেতে পারেন নাই।’