জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার করা জামিন আবেদনের ওপর আদেশ দেয়ার জন্য বুধবার (৩১ জুলাই) দিন ধার্য্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই তারিখ ঠিক করেন।
আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বুধবার দুপুর ২টায় পরবর্তী শুনানির সময় নির্ধারণ করেন। বুধবার শুনানি শেষে আদালতের আদেশ দেয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গত ২৮ জুলাই খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিনের আবেদন মেনশন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। আদালত এ আবেদনের ওপর শুনানির জন্য মঙ্গলবার দিন ঠিক করে দেন।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিন আবেদনের শুনানির জন্য সময় চান। এর প্রেক্ষিতে দুপুর ২টায় শুনানির সময় নির্ধারণ করে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুসের আদালত।
মঙ্গলবার সকালে আদালতে খালেদা জিয়ার মামলা ১১ নম্বর আইটেম ছিলো। সে হিসাব অনুযায়ী বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীরা সকালেই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে হাজির ছিলেন বেগম জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মীর নাসির, জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, মাসুদ রানা, আখতারুজ্জামান, আনিছুর রহমান খান প্রমুখ।
গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনটি নথিভূক্ত করে দুই মাসের মধ্যে মামলার নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর গত ২০ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ থেকে হাইকোর্টে এ মামলার নথি পাঠানো হয়।
গত ১৮ জুন মানহানির দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পান বেগম খালেদা জিয়া। ওইদিন আদালতের আদেশের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এই দুটি মামলায় জামিন পাওয়ার পর আর দুটি মামলায় তিনি জামিন পেলে মুক্তি পাবেন। একটা হলো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা, আরেকটা হলো জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা।
গত ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা বাতিল ও খালাস চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থদ- স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। তবে মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেননি হাইকোর্ট। জামিনের আবেদনটি নথিভূক্ত করে দুই মাসের মধ্যে মামলার নথি তলব করা হয়। নথি পাওয়ার পর জামিন আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছিলেন আদালত।
গত ১৮ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করেন বেগম খালেদা জিয়া। গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি ১০ লাখ টাকা টাকা জরিমানা করা হয়। রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো ঢাকা কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, তার একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকেও একই দণ্ড দেন আদালত।