গাজীপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মোট ৭২ জন ডেঙ্গু রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রোববারও ১০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রানী বিলাসমণি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী শাহরুখ জামান সিক্ত গত ২০ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হন। ২৩ জুলাই হাসপাতালের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তখন থেকেই তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতাল থেকে সাধারণ খাবার স্যালাইন ও প্যারাসিটামল দেয়া হচ্ছে। তিনি গাজীপুর থানা কাউন্সিল এলাকার বাসিন্দা।
গাজীপুর মহানগরের চান্দনা এলাকার বাসিন্দা সাকিব হাসান এবার উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি জানান, গত ২৪ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হন। তার মাথা, শরীর, চোখ ব্যথা ছাড়াও পানিসহ যে কোন প্রকার স্বাভাবিক খাবারে বমি বমি ভাব এবং বমি হয়। তিনি গত ২৭ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালেই রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পান। পেট ব্যথা এবং পাতলা পায়খানাও হচ্ছে তার।
পূর্ব চান্দনার বাসিন্দা আব্দুস সামাদ স্থানীয় হাসান তানভীর তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক। তিনি ২৪ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৫ জুলাই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি জানান, জ্বর এর পাশাপাশি মাথা, চোখ, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যথা ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে।
গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ বলেন, চলতি বছর এ হাসপাতাল থেকে মোট ৭২ জন ডেঙ্গু রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গত মে মাস থেকে এ পর্যন্ত মোট ৫১ জন রোগী ডেঙ্গু সংক্রমণের শিকার হয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। হাসপাতালে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে মোট ২১ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং দুইজন নারী। এদের মধ্যে রোববার ভর্তি হয়েছেন ১০ জন। এ রোগে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়া এ পর্যন্ত কোনো রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ বা তার প্রয়োজন পড়েনি।
চিকিৎসা কর্মকর্তা আরও জানান, হাসপাতালের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু রোগীদেরকে চিকিৎসা হিসেবে সাধারণত মশারি টানিয়ে শুয়ে থাকা, প্যারাসিটামল ও খাবার স্যালাইন দেয়া হয়। রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ কমে গেলে ওই ডেঙ্গু রোগী কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তার জন্য উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে হাসপাতালের পক্ষ থেকে চলমান পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের পাশাপাশি হাসপাতালের অভ্যন্তরে ঔষধ স্প্রে করা হচ্ছে। হাসপাতালের আশপাশের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে গাজীপুর মহানগর কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে চিঠি দেয়া হয়েছে।