শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হবে। ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা যাতে বিভ্রান্তি ও প্রতারণার শিকার না হয়, সে জন্য কোন কলেজ কোন শ্রেণির তা নির্ধারণে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবং এইচএসসির ফলের ভিত্তিতে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিতে ভাগটি হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যে কলেজগুলোতে গতবার (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) একাদশ শ্রেণিতে কমপক্ষে ৬০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল এবং এইচএসসিতে পাসের হার কমপক্ষে ৭০ শতাংশ ছিল সেগুলো ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত হবে। যেসব কলেজে অন্তত ৬০০ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল এবং পাসের হার ৭০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে সেগুলো ‘বি’ শ্রেণির এবং যেগুলোতে পাসের হার ৫০ শতাংশের কম, আবার শিক্ষার্থীও ৬০০ জনের কম, সেগুলো ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত হবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন কলেজগুলোকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করে প্রাথমিক তালিকাও করা হয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, অনেক সময় কলেজগুলো ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে। আবার প্রায় একই নামে একাধিক কলেজও আছে। তাই কলেজগুলোতে তিন শ্রেণি করে বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া হবে।
আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটিরও চেয়ারম্যান জিয়াউল হক। তিনি মনে করেন, যেহেতু ঢাকা বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, অন্য বোর্ডগুলোও তা অনুসরণ করবে। বিষয়টি নিয়ে অন্য শিক্ষা বোর্ডের সাথে আলোচনা করা হবে।
ঢাকা বোর্ডে ‘এ’ শ্রেণির কলেজে আসন ১ লাখ
প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বোর্ডের অধীন ‘এ’ শ্রেণির কলেজ ৮২টি। এগুলোতে আসন প্রায় ১ লাখ। ‘এ’ শ্রেণিতে থাকা ঢাকার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, নটর ডেম কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, সরকারি বিজ্ঞান কলেজ, হলিক্রস কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, বি এ এফ শাহীন কলেজ, শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজ, সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফ পাবলিক কলেজ।
১২ লাখ আসন খালি থাকবে
সারা দেশের কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কাজটি হবে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দেশে একাদশ শ্রেণিতে পড়ানোর মতো কলেজ ও মাদ্রাসা আছে ৭ হাজার ৩৬৩টি। এর মধ্যে কলেজ ৪ হাজার ৬০০টি। গত বছর এসব কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশে আসন ছিল ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬০৫টি। এবারও প্রায় একই থাকছে। যদিও কোনো কোনো কলেজ আসন বাড়াতে আবেদন করেছে। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ। ফলে প্রায় ১২ লাখ আসন খালি থাকবে।
ভর্তির আবেদন যেভাবে
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১২ মে আবেদন শুরু হবে, চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীকে অনলাইনে কমপক্ষে ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য পছন্দক্রম দিয়ে আবেদন করতে হবে। অনলাইনে আবেদন করতে হবে www.xiclassadmission.gov.bd ঠিকানায়। টেলিটক মোবাইল ফোনের মাধ্যমেও এসএমএস করে আবেদনের সুযোগ আছে। শিক্ষার্থীর ফল ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচন করে দেওয়া হবে। ৩০ জুনের মধ্যে ভর্তি শেষ করে আগামী ১ জুলাই থেকে ক্লাস শুরু হবে।