বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় : লোকমানকে বেধড়ক পেটাল ছাত্রলীগ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা ৩৫ দিন ভিসিবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র লোকমান হোসেনকে বেধড়ক পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন লোকমান। এই ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত সিফাত ও তার সহযোগীদের দায়ী করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের ১০০২নং কক্ষে গিয়ে মারধর করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। ভিসিবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বের ক্রেডিট নিতে ছাত্রলীগের সিফাত আহম্মেদ এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত লোকমান হোসেন জানান, ভিসিবিরোধী আন্দোলনে আমি সম্মুখভাগে থাকায় এটা নিয়ে ক্ষিপ্ত ছিল ছাত্রলীগের নামধারী কর্মী সিফাত আহম্মেদ। নানান সময় আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দেয় সিফাত ও তার লোকজন।

তিনি জানান, সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে আমাকে হুমকি দেয়া হয় এবং বিকেলে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমাকে যারা মারধর করেছে তারা সবাই সিফাতের লোক। সিফাতের নির্দেশে এই হামলা চালানো হয়। আমার রুমে ঢুকে লাঠিসোঁটা নিয়ে ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ছাত্র রিফাত বিন নাফিস, অ্যাকাউন্টিং ডিপার্টমেন্টের হাসিব, রাকিব, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সালাহউদ্দিন শান্ত ও সোহেল হামলায় সরাসরি অংশ নেয়।

আন্দোলনে অংশ নেয়া বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী জানান, প্রথমদিন থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ৩ থেকে ৪ জন প্রতিনিধিত্ব করে আসলেও ছাত্রলীগের নামধারী নেতা সিফাত আহম্মেদ আন্দোলনের মাঝখান থেকে নেতৃত্ব নেয়ার চেষ্টা করে। এই নিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।এছাড়া আন্দোলন সম্পর্কে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায়, টেলিভিশনে লোকমান হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও তনুশ্রী ভট্টাচার্য্যরে বক্তব্য প্রচারিত হলেও সিফাত আহম্মেদের বক্তব্য কোথাও প্রচার না হওয়ায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে সে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে সিফাত বেশ কয়েক দিন ধরেই আন্দোলনের নেতৃত্বের ক্রেডিট নিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করা কয়েকজনের ওপর হামলার জন্য টার্গেট করে। আর সেই পরিপ্রেক্ষিতে লোকমান হোসেনের ওপর এই হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ বেশ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থীর।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সিফাত আহম্মেদ জানান, লোকমানের সঙ্গে আমার কিছু হয়নি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে, আমি নাকি লোকমানের ওপর হামলা চালিয়েছি। কিন্তু আমরা একইসঙ্গে আন্দোলন করেছি। সেক্ষেত্রে তার সঙ্গে বিরোধ থাকার কথা নয়। কারা হামলা চালিয়েছে সেটা আমি জানি না।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top