নুসরাতকে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি : ঢামেক পরিচালক

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আমরা নুসরাতকে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা বলেছিলেন, কিন্তু নুসরাতের অবস্থা ভালো না থাকায় আমরা সিঙ্গাপুরে নিতে পারিনি।

ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষা কেন্দ্রে দগ্ধ মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ময়নাতদন্ত শেষে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, নুসরাতের শরীর এতোই পুড়েছে যে, আমরা তাকে রক্ষা করতে পারেনি। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, কিন্তু আমরা তার বায়োলজিক্যাল টেস্টের জন্য কিছু আলামত সংগ্রহ করেছি। এছাড়া পরবর্তীতে আরো অধিকতর তদন্তের প্রয়োজনে তার ডিএনএসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, নুসরাতের কাছ থেকে সংগৃহীত সব আলামতের পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে কিছুদিন সময় লাগবে। রিপোর্ট পেলে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবো আমরা।

নুসরাতের লাশের ময়নাতদন্ত করেন তিন সদস্যের মেডিকেল টিম। এর সদস্যরা হলেন- ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা: সোহেল মাহমুদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ডা: প্রদীপ বিশ্বাস, প্রভাষক বাবলী।

ডা: প্রদীপ বিশ্বাস জানান, ডিপ বার্নের কারণেই যে নুসরাতের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি তারা নিশ্চিত হয়েছেন। তবে শরীরে আগুন দেয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না তা জানতে মাইক্রোবায়োলজি এবং ডিএনএর পরীক্ষার জন্য কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন তারা।

এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: হোসাইন ইমাম জানান, দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। এছাড়া রক্ত ও লাং ইনফেকশনের কারণে কার্ডিও রেসপাইরেটরি ফেইলিয়র হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে নুসরাতের লাশ গ্রামের বাড়ি ফেনীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে নুসরাতের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে রওয়ানা হয়।

এর আগে আজ সকাল ৯টায় নুসরাতের লাশ মর্গে নেয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য। তার আগে নুসরাতের সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যায় নুসরাত।

এদিকে ফেনী থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার ছাত্রী ও আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে দাদির কবরের পাশেই দাফন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বাদ আসর সোনাগাজী মো: ছাবের সরকারী পাইলট হাই স্কুল মাঠে নুসরাত জাহান রাফির জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। জানাযা শেষে পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের ভূঁইয়া বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন নুসরাতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ উল্লাহ ফরহাদ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top