পাকিস্তান এবার প্রমাণ দেখালো বিদেশি কূটনীতিক-সাংবাদিকদের

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মাঘাতী বোমা হামলার প্রেক্ষিতে পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমিত হয়েছে অনেক আগে। তবে বাগযুদ্ধ থামেনি দেড় মাস পরও।

তাই পাকিস্তান এবার নিজেদের দাবির প্রমাণে বালাকাটে নিয়ে হাজির করেছে বিদেশি রাষ্ট্রদূত, সামরিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের। ভারত দাবি করছিল, এ স্থানে কার্যকর হামলা চালিয়ে তারা ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ঘাঁটি’ ধ্বংস এবং ‘৩০০ সন্ত্রাসী’কে হত্যা করেছে।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আইএসপিআর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পরিদর্শক ওই দলে ভারতীয়দের সংখ্যাই ছিল বেশি। আইএসপিআরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর সেখানে পরিদর্শক দলের সামনে পরিস্থিতির বিবরণ দেন। তিনি জানান, এ জায়গাতেই ভারত হামলা চালিয়ে বিপুল সফলতা অর্জন করেছে বলে দাবি করেছে।

এ সময় তাদেরকে দেখানো হয়, ভারতের দাবিকৃত কোনো অবকাঠামোগত ক্ষতি বা প্রাণহানির মতো ক্ষতি সেখানে হয়নি। এমনকি ভারত যে মাদরাসাটিকে একটি সন্ত্রাসী ঘাঁটি বলে উল্লেখ করে তার ধ্বংসের দাবি করেছিল, সেখানেও পরিদর্শক দলকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তারা ওই মাদরাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে কথা বলেন এবং দেখতে পান, ওই মাদরাসাটি কোনো প্রকার ক্ষতি শিকার হয়নি।

আইএসপিআর মহাপরিচালক আসিফ গফুর বলেন, ভারতের উচিত মিথ্যা দাবি করা বাদ দিয়ে বাস্তবতা মেনে নেয়া। একটি দায়িত্বশীল দেশের মতো আচরণ করা এবং ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মিরের অস্থিতিশীলতার পেছনে কী কারণ আছে তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়া।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। এতে ওই বাহিনীর ৪৪ সদস্য নিহত হয়।

ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানায় মোদি সরকার। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে সে আহ্বানে সাড়া দেয়া না হলে পরবর্তীতে নিজেরাই পাকিস্তানের বিভিন্ন সুবিধা বন্ধ করে দেয়।

এতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত পাকিস্তানের বালাকোটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে হামলা চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি সাধন করে আসার দাবি করে। ভারতীয় গণমাধ্যমে এক পর্যায়ে বলা হয়, ওই হামলায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে এবং ৩০০-৩৫০ ব্যক্তি ওই হামলায় নিহত হয়েছে।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতের অভিযানের কথা স্বীকার করা হলেও বলা হয়, তাদের হামলায় কথিত সেই ক্ষয়ক্ষতির কোনো নিদর্শন তারা পায়নি। পাকিস্তানের সাংবাদিকরা জানান, ভারতের এ হামলায় একটি কাক মারা গেছে, কয়েকটি গাছ বিনষ্ট হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ক্ষতি হিসেবে আশপাশের কয়েকটি কাঁচাঘরে ফাটল ধরেছে।

কিন্তু ভারত সবসময়ই এ দাবি অস্বীকার করে আসছিল। তারই প্রেক্ষিতে পাকিস্তান বিদেশী কূটনীতিক, সামরিক কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সে স্থান পরিদর্শনে নিয়ে যায়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top