ফেনীর পরীক্ষা কেন্দ্রে দগ্ধ মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির অবস্থা আগের চেয়ে তুলনামূলক একটু ভালো। তবে শঙ্কা কাটছে না চিকিৎসকদের।
আজ বুধবার দুপুরে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা: সামন্ত লাল সেন জানান, আজো সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের সাথে আমাদের ভিডিও কনফারেন্সে কথা হয়েছে। মেয়েটির সর্বশেষ আপডেট আমরা তাদের পাঠিয়েছি। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা ফিডব্যাক পাবো। আমরা যে চিকিৎসা দিচ্ছি না অন্য পন্থা নিব তা জানা যাবে।
তিনি আরো বলেন, আগামী ১৬ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের একটি চিকিৎসক দল অন্য একটি বিষয়ে ঢাকায় আসছে। তারা নুসরাতকেও দেখবেন।
এদিকে, মেয়ে নুসরাতের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তার বাবা এ এম এম মুসা। ‘আমার মেয়ের জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন। সোমবার সকাল থেকে মেয়েটি কোনো কথাই বলতে পারছে না। আপনারা সবাই দোয়া করবেন’- এভাবেই বারবার দোয়া চাচ্ছিলেন তিনি।
নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান জানান, ‘সিঙ্গাপুর নিতে হলে কমপক্ষে ছয় ঘন্টা আমার কলিজার টুকরা বোন নুসরাত জাহান রাফিকে টিকে থাকতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার বোনকে সিংগাপুরের ডাক্তাররা রিসিভ করার জন্য অপেক্ষায় থাকলেও তার অবস্থার এতোটাই অবনতি হয়েছে যে, তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আজ দুপুরে সর্বশেষ সিঙ্গাপুরের ডাক্তাররা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন, এই ট্রিটমেন্ট পেলে আমার বোনের হয়তো ছয় ঘন্টা টিকে থাকার মতো অবস্থা হবে।’
তিনি আরো বলেন, আগামী ১৬ তারিখ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের ১২ জন বড় ডাক্তার বাংলাদেশে আসছেন। নুসরাতকে তারা চিকিৎসা দিবেন বলে জানিয়েছেন ডাক্তার।
গত শনিবার সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে একদল দুর্বৃত্ত নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। বর্তমানে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
নুসরাত ওই মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের স্বজনরা তাকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করে বলে পরিবারের অভিযোগ। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন- পৌর কাউন্সিলর মাকসুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, সাবেক ছাত্র শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নূর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।