প্যারোলে নয়, আমরা দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি চাই : ফখরুল

অবিলম্বে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন শুরু করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার ০৭ এপ্রিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইনিস্টিটিউশনে বিএনপি আয়োজিত গণঅনশনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দেশনেত্রীর প্যারোলে মুক্তি চাই না, নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তিনি বলেন, গনতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে যে মামলায় সাজা দিয়ে ১৪ মাস কারাগারে রাখা হয়েছে সেসব মামলায় সরকার দলের নেতাকর্মীরা জামিনে বাহিরে ঘুরছেন। জামিন পাওয়া বেগম জিয়ার নাগরিক অধিকার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশটা একটি কারাগারে পরিণত হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যেই গৌরবউজ্জল দেশ অর্জন করেছি এই সরকার আমাদের সেসকল অর্জন ধংশ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, বেগম জিয়া তার পছন্দমত বিশেষায়িত হাসপাতেলে চিকিৎসা নিতে চান, এটা তার অধিকার। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য রাজপথে আন্দোলন করেন।

গণঅনশনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডা. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীর উত্তম), গনস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরাম সাধারন সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মুহাম্মদ (ইব্রাহীম বীর প্রতীক), নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মির্জা আজম, মেজর হাফিজ উদ্দিন, সামসুজ্জামান দুদু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মজিবর রহমান সারোয়ার, খাইরুল কবির খোকন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।

গণশুনানী কর্মসূচীতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, সরকার তার ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বেগম জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছেন। বেগম জিয়াকে কারাগারে নেওয়া হয়নি, গনতন্ত্রকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমান সরকার অলিখিত ভাবে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে ড. মোশারফ বলেন, এ সরকার অস্বাভাবিক সরকার, সরকারের মন্ত্রীসভা অস্বাভাবিক।

ডাকসু নির্বাচন অস্বাভাবিক উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ডাকসুতে বিজয়ী এবং পরাজিত সবাই এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে। উপজেলা নির্বাচনে সরকারের অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ নির্বাচনে ৮% ভোটও পরেনি।

বিএনপির অরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ বলেন, আইনজীবি হিসেবে আমি বলছি আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম জিয়ার দ্রুত মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তার মুক্তির জন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় এসে এদেশের বড় ধরনের ক্ষতি করে ফেলেছে। সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি করেছে সেটি হলো , দেশের পুরো নির্বাচন ব্যাবস্থাকে ধংশ করে ফেলেছে। দেশের জনগণ নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, সরকার জনগণের ভোটের অধিকার যেভাবে কেড়ে নিয়েছেন তাতে করে আমরা না চাইলেও জনগণ এই অন্যায়ের জবাব দিবে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাষ্টি ও ঐক্যফন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরাদেশকে সরকার অসুস্থ করে ফেলেছে। সরকারের নির্যাতনে জনগণ এখন অসুস্থ। তিনি বলেন, দয়া দক্ষিণা চেয়ে বেগম জিয়ার মুক্তি হবে না। রাজপথে কিভাবে নামা যায় আমাদের সেই চেষ্টা করা উচিৎ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top