ভিপি নুরের মুখে ডিম ছুঁড়ে মারলো কে ?

এক ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার বিচার দাবিতে মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলে গেলে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ শিক্ষার্থীদের উপর ডিম ছুঁড়ে মারা হয়। এখন প্রশ্ন উঠেছে এই ডিম মেরেছে। যদিও নুরু দাবি করেছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা এই কাজ করেছে। কিন্তু একক ভাবে কারো নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একজন নির্বাচিত ভিপির উপর ডিম ছুঁড়ে মারার মতো ঔদ্ধত্য হয় কি করে? সেটাই এখন ঢাবি শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন।

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর এই ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কারসহ চার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন।

তার অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-ছাত্রলীগের ‘কবল’ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে মুক্ত করা, অছাত্র ও বহিরাগতদের তাড়াতে হলগুলোতে অভিযান পরিচালনা এবং নিয়মিত ছাত্রদের হলের সিটগুলোতে থাকার ব্যবস্থা করা।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান থেকে না সরার ঘোষণা দিয়ে নূর বলেছেন, ‘দাবি আদায় করেই এখান থেকে উঠব। যদি দাবি আদায় করতে পারি তাহলেই শিক্ষার্থীদের মাঝে ফিরে যাব। আর দাবি আদায় করতে না পারলে প্রয়োজনে লাশ হয়ে ফিরব।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এসএম হল থেকে ফিরেই ভিসির বাংলোর সামনে অবস্থান নেন নূর ও তার সহকর্মীরা। ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন খাঁনসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা রয়েছেন তার সাথে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ডাকসুর ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা অরণি সেমন্তি খানকেও দেখা গেছে সেখানে।

গত মাসে অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনের সময় এসএম হলে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও শেষ মুহূর্তে প্রত্যাহার করা ফরিদ হাসানকে সোমবার রাতে পিটিয়ে আহত করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি ফরিদের মাথায় ডান কানের পাশে ও চোখের উপরে জখম হয়েছে, সেখানে ৩২টি সেলাই পড়েছে।

এ হামলায় জড়িতদের বিচার দাবিতে নূরের নেতৃত্বে বিকালে টিএসসির রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল বেরোয়। শতাধিক শিক্ষার্থীসহ মিছিল নিয়ে নূর এস এম হলে ঢুকলে তাদের ওপর হামলা হয়।

নূর বলেছেন, ফরিদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলে ডাকসুর ভিপি হিসেবে, ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি তাদের সাথে যোগ দেন। এ বিষয়ে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তিনি এসএম হলের প্রাধ্যক্ষের কাছেও একটি অভিযোগ দিতে বলেন।

তার পরামর্শে লিখিত অভিযোগ দিতে ওই হলে গিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগের রাতে হামলায় আহত ফরিদ তার জামা-কাপড় আনতে ভয় পাচ্ছিল। সেজন্য আমি তাকে নিয়ে তার রুমে গিয়েছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং হল সংসদের ভিপি-জিএস তারাও ছাত্রলীগের নেতা, তারা এসে আমার সাথে যারা ছিল তাদের ওপর হামলা করে।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার সাথের কয়েকজনকে বেদম মারধর করে অভিযোগ করে নূর বলেন, তাদের মারধরে আতাউল্লাহ নামের এক ছাত্র খুব আহত হয়েছেন।

ওই সময় নূরসহ অন্যরা হল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেও তাদের আটকে টেনেহিঁচড়ে হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষের সামনে নিয়ে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন নুরুল হক নূর।

এ সময় তাদের উদ্ধারের জন্য বারবার প্রক্টর ও প্রভোস্টকে ফোন করেও কোনো সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নূর বলেন, পরে প্রক্টরিয়াল টিমের কয়েকজন সদস্যকে সেখানে পাঠানো হলেও তারা তাদের উদ্ধার করতে পারেনি। এক ঘণ্টারও বেশি পরে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার ঘটনাস্থলে আসার পর তারা হল থেকে বেরোতে পারেন।

হল থেকে বেরিয়ে আসার সময়ও পেছন থেকে তাদের কয়েকজনকে লাথি, কিল-ঘুষি ও ডিম নিক্ষেপ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে তাদের হলে আটকে রাখার খবর শুনে শিক্ষার্থীরা ওই হলের সামনে গেলে তাদের মধ্যে থাকা মেয়ে শিক্ষার্থীদের কটূক্তি করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন নূর।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top