ময়নাদের স্বপ্ন কি থেমে যাবে?

চারদিকে উৎকট পোড়া গন্ধ। কালো ছাই আর পানিতে পুরো মেঝে একাকার। এর মাঝে পুড়ে যাওয়া স্বপ্নকে নতুন করে আবারো সাজানোর চেষ্টা করছেন ময়না খাতুন। শনিবার ভোরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গুলশান-১ এর কাচাঁবাজারের আগুনের ঘটনায় পুড়ে যাওয়া দোকানের ধ্বংসস্তুপের মধ্যেই নিজের স্বপ্নকে খোঁজার চেষ্টা করছিল ময়না।

আজ রোববার সকালে পুড়ে যাওয়া মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল ময়না খাতুনের মতো বেশির ভাগ দোকান মালিক ও কর্মচারী এসেছেন পুড়ে শেষ হয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তুপের মধ্যে অবশিষ্ট কিছু আছে কিনা তার খুঁজে পেতে। কিন্তু না, নিরাশ হয়েই ফিরছেন তারা। আগুনের লেলিহান শিখা সব কিছুকে শেষ করে দিয়েছে। দীর্ঘশ্বাসই এখন শেষ পুঁজি তাদের ।

ডিএনসিসি’র এই কাঁচা বাজারের উত্তর দিকের দ্বিতীয় গলিতে ময়না খাতুনের মালিকের তিনটি দোকান। মালিকের নাম শাকিল মিয়া। ময়না খাতুন দীর্ঘ ৪/৫ বছর ধরেই এই দোকানে কাজ করছে। স্বামীর উপার্জন নেই। চার সন্তান নিয়ে থাকেন পাশের এক বস্তিতে। মাসিক বেতন চুক্তিতে কাজ করেন এই তিন দোকানে। মার্কেটে আগুন লাগার আগের দিন রাত অবধি কাজ শেষ করে বাসায় গেছেন। পরদিন ভোরেই জানতে পারেন আগুন লাগার সংবাদ।

নাস্তা না করেই ছুটে আসেন মার্কেটে। কিন্তু ততক্ষণে দোকানের প্রায় সবই শেষ। কিন্তু এই শেষ হওয়ার মধ্যেও নতুন করে আবারো স্বপ্ন দেখতে চায় ময়না। সন্তানদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই নতুন করে স্বপ্ন দেখতে হবে তাকে।

আবার ঘুরে দাঁড়াতে হবে। গায়-গতরের শক্তি যতদিন আছে এখানে না হয় অন্য কোথাও হলেও কাজ তাকে করতেই হবে। নিজের কর্মক্ষেত্র দোকান পুড়লেও কি ময়নাদের স্বপ্ন থেমে থাকবে ?

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top