জাতীয় বাজেটে হকারদের জন্য বরাদ্দসহ ১০ দফা সুপারিশ নিয়ে বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে হকার্স ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
বুধবার সচিবালয়ের সামনে সমাবেশ শেষ করে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হাশেম কবিরের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অর্থ মন্ত্রণালয় গিয়ে স্মারকলিপি দেন। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন সহ-সভাপতি আবুল কালাম, আলী আহম্মদ, মো. শহীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, মো. শহীদ খান, আশরাফ হোসেন, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম তালুকদার, ফারুক হোসেন, মো. লিটন। হকার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে হকারদের ওপর গ্রেফতার-মামলা-হয়রানি-নির্যাতন এবং পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ বন্ধ এবং হকারদের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের দাবিতে তারা এ কর্মসূচি পালন করে।
এর আগে বেলা ১২টায় গুলিস্তান থেকে কয়েক হাজার হকারের একটি মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় অভিমুখে যাত্রা করে। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে সচিবলায় লিংক রোডে পৌঁছালে পুলিশ কাটাতারের ব্যারিকেড তৈরি করে বাধা দেয়। পুলিশি বাধার মুখে সেখানেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হাশিম কবীরের সভাপতিত্বে স্মারকলিপি পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত। উপস্থিত নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক হযরত আলী, সহসভাপতি আবুল কালাম, আহম্মদ আলী, গোলাপ হোসেন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে হকার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদী ভাঙ্গন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়-সম্বল হারিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ রাজধানী ঢাকা শহরে বসবাস করছে। তারা এখন এই ঢাকা শহরের ভোটার। জলবায়ু পরিবর্তনে এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য দায়ী রাষ্ট্রগুলো থেকে যে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় তা এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ কখনই পায় না। তাই এই মানুষগুলো নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই সৃষ্টি করার জন্য বেছে নিয়েছে রাজধানীর ফুটপাত। এই হকারদের জীবন ধারণের উপায়ও ফুটপাত। ফুটপাত থেকে উপার্জন করে তারা জীবিকা নির্বাহ করে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, প্রায় ২ কোটির অধিক মানুষের শহরে কমপক্ষে ৪ লাখ হকার ফুটপাতের উপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। শুধু তাই নয়, তাদের উপার্জনের সঞ্চিত অর্থ থেকে কিছু টাকা গ্রামে গরিব মাতা-পিতার জন্য পাঠায়। যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে ভূমিকা পালন করে। দেশের ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পে বিকাশ সাধনে হকাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসন গত ২২ জনুয়ারি পুলিশ সপ্তাহের বলে হকারদেরকে ফুটপাত ছেড়ে দিতে বলে। দশ দফা সুপারিশে যা আছে।পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ চলবে না। হকারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। হকারদের উপর দমন পীড়ন নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। প্রকৃত হকারদের তালিকাভুক্তিকরণসহ আইডি কার্ড দিতে হবে। দখলকৃত সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে হকারদের পুর্নবাসন করতে হবে। হকারদের ট্যাক্সের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। হকারদের পুর্নবাসনের জন্য ৫ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। জাতীয় বাজেটে হকারদের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। হকার ব্যবস্থাপনার জাতীয় নীতিমালা তৈরি করতে হবে।