যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ এক ধরনের ভিসা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। মূলত বিপুল পরিমাণ টাকা এবং কিছু শর্তের বিনিময়ে পাওয়া যায় এই বিশেষ ভিসা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিশেষ এই ভিসা নেয়ার ক্ষেত্রে গত দুই বছরে ভারতীয়দের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় চারগুণ। এ সময়ের মধ্যে তারা দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানকে পেছনে ফেলে তিন নম্বরে চলে এসেছে। এখন ভারতের আগে রয়েছে শুধু চীন আর ভিয়েতনাম।
বিশেষ এই ভিসা ব্যবস্থা মূলত হচ্ছে ক্যাশ ফর গ্রিন কার্ড, অর্থাৎ টাকা দিয়ে গ্রিন কার্ড-এই নামেই প্রচলিত ইবি-ফাইভ ভিসা। এক মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ৮ কোটির চেয়ে কিছু বেশি টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি বছরে অন্তত দশ জন মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রæতি দেয়া হলে এই ভিসা পাওয়া যায়। আর রিয়েল এস্টেটের মতো কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এই জমা রাখা টাকার পরিমাণ আরা কমিয়ে চার কোটি টাকার মতো করেছে মার্কিন প্রশাসন। এ সুযোগটি নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে ভারতীয়রা।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মোট ৫৮৫ জন ভারতীয় আবেদনকারী এ গ্রিন কার্ড পেয়েছেন। আগের সময়ের তুলনায় এ ক্ষেত্রে ভারতীয়দের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৯৮ শতাংশ। ২১ মাস ধরে গ্রিনকার্ড থাকলে এরপর কেউ পুরোপুরি মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এমনিতে কাজ করার জন্য প্রয়োজন এইচ-ওয়ান বি ভিসা। কিন্তু দিন দিন এক্ষেত্রে মার্কিন নীতি আরো কঠিন করা হচ্ছে। ফলে টাকা দিয়ে গ্রিনকার্ড নিতে ভিড় করছে ভারতীয়রা। এমনকি ভারতের ধনী ব্যক্তিরা ছেলেমেয়েদের সেখানে পড়াশুনা করতে পাঠানোর পরপরই এ বিশেষ গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করে দিচ্ছেন। এর ফলে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর তারা সহজেই আমেরিকাতে থেকে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। অন্য কোনো ব্যবস্থার জন্য তাদের আর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এ কারণেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে এই বিশেষ গ্রিনকার্ডের।
প্রতি বছর বিদেশিদের জন্য এ ধরনের মোট ১০ হাজার ইবি-ফাইভ ভিসা নির্দিষ্ট রাখা হয়েছে। আবার বলা হয়েছে, কোনো দেশই মোট ভিসার ৭ শতাংশের বেশি পাবে না। এ কারণেই ভিয়েতনাম ও চীনের বিনিয়োগকারীরা অনেক বেশি সংখ্যায় আমেরিকায় থাকতে চাইলেও সেই নীতিতে আটকে যাচ্ছেন। আর এ সুযোগটিকে কাজে লাগাচ্ছে ভারতীয়রা।