বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং পিপিআরসির চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ওয়াশ খাতে বরাদ্দকৃত বাজেট ও ব্যয়ের ধরন থেকে এটা পরিষ্কার ওয়াশ বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার এখনো একটি চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থা পরিবর্তনে দক্ষতার উন্নয়ন ও এ খাতে নিয়মিত ব্যয় পর্যবেক্ষণ জরুরি বলে মত দেন তিনি। টেকসই উন্নয়নের অভীষ্ট অর্জনে গুরুত্বারোপ করেন ৬ ওয়াশ খাতে অর্থায়ন ঘাটতি কমিয়ে আনার উপর।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ওয়াটারএইড, ইউনিসেফ, পিপিআরসি, ফানসা-বিডি, ডব্লিউএসএসসিসি-বি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স’র উদ্যোগে যৌথভাবে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচকগণ প্রয়োজনীয় অর্থায়নসহ নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতকে মূলধারায় নিয়ে আসা জরুরি বলে মতামত তুলে ধরেন। ২০১৯-২০ সালের আসন্ন জাতীয় বাজেটে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ এর জন্য সঠিক ও পর্যাপ্ত ববরাদ্দ নিশ্চিত না করা হলে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনে উন্নয়নের গতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে মতামত দেন বক্তারা।
আলোচকগণ প্রয়োজনীয় অর্থায়নসহ নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতকে মূলধারায় নিয়ে আসা জরুরি বলে মতামত তুলে ধরেন। ২০১৯-২০ সালের আসন্ন জাতীয় বাজেটে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৬ এর জন্য সঠিক ও পর্যাপ্ত ববরাদ্দ নিশ্চিত না করা হলে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনে উন্নয়নের গতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে মত দেন বক্তারা।
সম্প্রতি ওয়াটারএইড ও ইউনিসেফের সহায়তায় পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) এক গবেষণায় দেখা যায় যে, দেশে ওয়াশ খাতে অর্থ বরাদ্দের দীর্ঘমেয়াদী ধারা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গত তিন বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতেও (এডিপি) ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ৫% হারে স্থির রয়েছে। সরকার ইতোমধ্যেই ওয়াশখাতের অর্থায়নে প্রশংসনীয় উন্নতি সাধন করলেও গত ৯ অর্থবছরে জিডিপি ও জাতীয় বাজেট বৃদ্ধির তুলনায় ওয়াশ খাতের আপেক্ষিক বৃদ্ধি মাত্র ৫৬.৩১%, যা তুলনামূলকভাবে কম।
এছাড়া পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যবিধি এবং সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়গুলি সাব-সেক্টরভিত্তিক বরাদ্দের ক্ষেত্রে এখনও উপেক্ষিত। অঞ্চলভিত্তিক বরাদ্দ বৈষম্য এ গবেষনায় উঠে এসেছে। গ্রামীণ ওয়াশ ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ডিপিএইচই) বরাদ্দ গতবছরের তুলনায় ৫২% বৃদ্ধি পেলেও প্রকৃতপক্ষে তা ৪টি ওয়াসার বরাদ্দের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ যা শহর ও গ্রামের মধ্যে বিদ্যমান ব্যাপক বৈষম্যেকেই নির্দেশ করে।
ওয়াশ খাতে বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহারও একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গবেষনায় উঠে এসেছে। উল্লেখ্য গত তিন বছর ওয়াশ খাতে বরাদ্দের বিপরীতে অর্থ ব্যয়ের হার ছিল প্রায় ৮০%।
প্রেস কনফারেন্সে ওয়াশ সেক্টর নেটওয়ার্ক সম্মিলিতভাবে ওয়াশকে মূলধারায় আনতে কতগুলো সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- গ্রামীণ ও মাঝারী শহর এলাকায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের (ডিপিএইচই) বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। দুর্গম এলাকাসমূহ এবং বরাদ্দ না পাওয়া সিটি কর্পোরেশনগুলোতে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ দিতে হবে। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যবিধি এবং সচেতনতা সৃষ্টির মতো সাব-সেক্টরাল বিষয়গুলোতে বরাদ্দ বৃদ্ধিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে। মানবসম্পদের ঘাটতি দূর করতে হবে এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে কাজ করার সংস্কৃতি জোরদার করতে হবে। সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯ বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ওয়াশ পরিবীক্ষণ ইউনিট প্রতিষ্ঠা করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ অর্জনের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় এসডিজি’র নীতিমালা সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এসডিজি ৬ অর্জনে ওয়াশ খাতে অর্থায়ন ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে।