বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চলমান উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনপদের পর জনপদে রক্ত গঙ্গা বইছে। সরকার হুমকি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। সন্ত্রাসের ব্যধিতে আক্রান্ত বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দফা উপজেলা নির্বাচনে গতকাল রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় নির্বাচন শেষে ফলাফল ও সরঞ্জাম নিয়ে ফেরার সময় অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের ব্রাশফায়ারে সাতজন নিহত ও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হওয়ার সন্ত্রাসী ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দফা একতরফা উপজেলা নির্বাচনে জনগণ কোনো সাড়া দেয়নি। কারণ বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনকে জনগণ বিশ্বাসযোগ্য মনে করে না। এই সরকার জনগণের আস্থা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিরোধীদলহীন একদলীয় শাসনই এই সরকারের টিকে থাকা একমাত্র ভরসা। তাই দেশকে বিরোধীদলহীন করার জন্য সরকার তার সরকারী যন্ত্রকে যত্রতত্রভাবে ব্যবহার করছে। বিএনপিসহ বিরোধী দলের নিশ্চিহ্নকরণের যাবতীয় উদ্যোগ আয়োজনে কোনো কমতি নেই। এখন ভোটারবিহীন উপজেলা নির্বাচনে দখলদারিত্ব নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা নিজেরাই খুনখারাপীতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। গণতন্ত্রহীনতা ও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুপস্থিতির কারণেই নির্বাচন নিয়ে দুর্বৃত্তদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, বিনাভোটে স্থানীয় ক্ষমতা আয়ত্বে নিতে আধিপত্যের লড়াইয়ের জন্যই নির্বাচনী দায়িত্বরত কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নারী সদস্যসহ নিহত অন্যান্যদের প্রাণ ঝরিয়ে দেয়া হলো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মধ্যরাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে ক্ষমতা দখলের প্রক্রিয়ায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নেই বলেই ক্ষমতাসীন নেতারা স্থানীয় ক্ষমতা দখল করতে হিংসা প্রতিহিংসার প্রতিযোগিতায় রক্ত ঝরাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, হিংসা-বিদ্বেষ ক্ষমতাসীনদের রাজনীতির কর্মসূচি হওয়ার কারণে মানুষ হত্যার মতো নারকীয় ঘটনা ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বেআইনী সন্ত্রাসী হামলায় দল-মত নির্বিশেষে যেকোনো মানুষের মৃত্যুকেই আমরা ঘৃণ্য কাজ বলে মনে করি এবং এর বিরুদ্ধে সবসময় তীব্র প্রতিবাদে সোচ্চার। আমি মনে করি, বাঘাইছড়িতে নির্বাচনী দায়িত্বরত ব্যক্তিদের ওপর এটি একটি সুপরিকল্পিত আক্রমণ। আমি এই হতাহতে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি, নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে আশু সুস্থতা কামনা করছি। এই সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।