‘৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে যে অশুভ শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের চিরতরে উৎখাত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।’ তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের এজেন্ট বলে মন্তব্য করেন।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বপ্ন ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও অগ্নিঝরা মার্চ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
হানিফ বলেন, ‘জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করেছেন। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের এজেন্ট। কুখ্যাত রাজাকার আব্দুল আলিমসহ বহু রাজাকারকে মন্ত্রী বানিয়েছে জিয়াউর রহমান। গোলাম আযমকে এদেশে ফিরিয়ে আনেন তিনি। তার ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়াও পাকিস্তানের এজেন্ট।’
হানিফ আরো বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তানের এজেন্ট বিএনপি-জামায়াত থাকবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করবে। পাকিস্তানি এই এজেন্টদের চিরতরে উৎখাত করতে হবে।’
‘ডাকসু নির্বাচন অবাধ হয়েছে বলেই অন্যরা জয়ী হতে পেরেছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীদের আস্থা হারিয়েছে, আশা করি তারা আবার অর্জন করতে সক্ষম হবেন’, বলেন হানিফ।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আসলে ভাষণ নয়, এটা একটি মহাকাব্য। পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ জাতির পিতার ভাষণ, ওয়াল্ড হেরিটেজ লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে। এটি সৃষ্টির ভাষণ। কোনো ভাষণে পৃথিবীর কোনো দেশ সৃষ্টি হয় নাই, বাঙালিরাই একমাত্র সৌভাগ্যবান জাতি, যে জাতির জনকের ভাষণে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভীকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসায়ীর সাথে তুলনা করে বিএনপির আবাসিক নেতা খালেদা জিয়াকে অপমান করেছেন, এমনিতেই আপনাদের নেত্রী দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, আর এর সাথে ইয়াবা ব্যবসায়ীর সাথে তুলনা করে আরো নিচে নামিয়ে দিলেন। আশা করবো, বিএনপির আবাসিক নেতা সরকারের অহেতুক মিথ্যাচার করতে গিয়ে আর নিচে নামবেন না।’
অনুষ্ঠানে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সাথে আঁতাত করে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করেছেন। এজন্য বিভিন্ন সময় তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হতো। ’৭৫ পরবর্তী কার্যক্রম পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তার প্রতিষ্ঠিত দলের ভূমিকাও একই।’
কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা ৭ মার্চ মানে না, মুজিবনগর দিবস পালন করে নয়। তারা আইএসের সাথে আঁতাত করে দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। আমরা বিশ্বাস করি, আজীবন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিই ক্ষমতায় থাকবে।’
স্বপ্ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা: আবু ইউসুফ ফকির, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।