সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের পুরো প্যানেল জয়লাভ করতো : নুর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত ভিপি (সহ-সভাপতি) নুরুল হক নুর। সোমবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের পুরো প্যানেল জিততো। তার অন্যতম উদাহরণ সুফিয়া কামাল, শামসুন্নাহার ও কুয়েত মৈত্রী হল।

মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দেন নুরুল হক নুর। এতে তিনি নির্বাচন নিয়ে তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তুলে ধরেছেন।

এতে তিনি লিখেছেন,‘(ভোটের আগের) রাতে ব্যালটে পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করা হয়েছে। বাইরের শিক্ষার্থীরা যেন ভোট দিতে না পারে সেজন্য গণরুমের শিক্ষার্থী এবং নিজেদের লেজুরবৃত্তিক অপরাজনীতি করা নেতা-কর্মীদের দিয়ে বিশাল লাইন করানো হয়েছে। এত কারচুপি, অনিয়ম, রাতভর ইঞ্জিনিয়ারিং করেও নুর এবং আখতারকে হারাতে পারেনি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের পুরো প্যানেল জিততো। তার অন্যতম উদাহরণ সুফিয়া কামাল, শামসুন্নাহার ও কুয়েত মৈত্রী হল।’

সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নুরকে। তিনি পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।

অন্যদিকে নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে জয়লাভ করেছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এ ছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হয়েছেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।

এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ৩টা ১৭ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ফলাফল ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান।

পটুয়াখালীতে জন্ম নেয়া এই শিক্ষার্থী কোটা সংস্কার আন্দোলন করতে গিয়ে হামলা, মামলা ও কারাবরণের মুখোমুখি হন। এমনকি ডাকসু নির্বাচন চলাকালে নির্বাচনে অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছাত্রলীগের নারী প্রার্থীদের দ্বারা মারধরের শিকার হয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। তারপরও তাকে দমিয়ে রাখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে তাকেই নেতা নির্বাচিত করেছেন।

সোমবার দুপুরে রোকেয়া হলে ছাত্রলীগের হামলায় শিকার হওয়ার পর আহত অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন নুরুল হক। ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক গণমাধ্যমকে বলেন,‘এ রকম নির্বাচন আমাদের কারোরই প্রত্যাশা ছিল না। ২৮ বছর পর এই নির্বাচন হয়েছে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে ছিল। জাতীয় নির্বাচনের পর নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর মানুষের যে অনাস্থার সৃষ্টি হয়েছি- আমরা ভেবেছিলাম সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সেখানে আশার আলোর সঞ্চার করা হবে। কিন্তু প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন যে কারচুপি করেছে তা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয় পুরো দেশকে হতাশ করেছে। আমরা মনে করি, ১১ মার্চের নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়।’

ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন বাদে বাকি সব সংগঠন এই নির্বাচন বর্জন করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘তাদের (নির্বাচন বর্জন করা ছাত্রসংগঠনগুলো) সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top