অ্যাপাচি মোটরসাইকেল হাতিয়ে নিতেই সবুজকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছিল দুই ঘাতক

খুলনায় ইটভাটার ঠিকাদার হাবিবুর রহমান সবুজকে (২৬) খণ্ড-বিখণ্ড করে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন মূল ঘাতকসহ দুই যুবককে আটক করেছে র‌্যাব। আটককৃতরা হলো সরদার আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ (৩৮) ও অনুপম (৩৪)। সোমবার ভোরে তাদের আটক করা হয়।

র‌্যাব-৬ এর সূত্র জানায়, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আসাদুজ্জামানকে নগরীর ফুলবাড়ি গেট এলাকা থেকে আটক করা হয়। একই সময় বটিয়াঘাটা উপজেলার হাটবাটী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অনুপম নামের আরেক যুবককে আটক করা হয়। পরে আসাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার ভাড়া বাসা নগরীর ৩৪, ফারাজীপাড়া লেনের ‘হাসনাত মঞ্জিল’ এর নিচতলার একটি ড্রামের ভেতর থেকে নিহত হাবিবুর রহমান সবুজের নাড়ি-ভুঁড়ি ও কাঠের নিচে পলিথিন দিয়ে পেচানো পা এবং তার ব্যবহৃত নতুন অ্যাপাচি মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।

র‌্যাব-৬ এর স্পেশাল কোম্পানি কমা-ার মেজর শামীম সরকার বলেন, ভোরে কুয়েটের সামনে থেকে আসাদুজ্জামানকে আটক করার পর তার দেয়া তথ্য মতে তারই বাসা থেকে সকাল ৬টার দিকে খণ্ডিত লাশের অবশিষ্টাংশ নাড়ি-ভুড়ি ও কাটা পা উদ্ধার করা হয়। একই সময় বটিয়াঘাটার বাসা থেকে অনুপমকে আটক করা হয়।

‘হাসনাত মঞ্জিল’-এর বাসার মালিক রেশমা খাতুন জানান, গত ২৪ ডিসেম্বর খুলনার আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা পরিচয়ে সরদার আসাদুজ্জামান ৪ হাজার টাকায় নিচতলার একটি রুম ভাড়া নেয়। তার স্ত্রী এখানে না থাকলেও তিনি মাঝেমধ্যে আসতেন।

পুলিশ জানায়, আটক সরদার আসাদুজ্জামান আসাদ বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত নূরুল হক সরদারের ছেলে ও অনুপম মহলদার খুলনা জেলার বটিয়াঘাট উপজেলার হাটবাটী গ্রামের নিভান মহলদারের ছেলে।

পুলিশ আরো জানায়, হত্যাকারীদের সঙ্গে নিহত হাবিবের পরিচয় হয় খুলনা কারাগারে। সেই সূত্র ধরে হাবিবের কাছে থাকা আর্থিক লেনদেনের একটি স্ট্যাম্প ও অ্যাপাচি মোটরসাইকেল হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে তাকে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে গুম করার পরিকল্পনা ছিল ঘাতকদের।

উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর শের-এ বাংলা রোডের বলাকা ক্লাবের সামনে থেকে পলিথিনে মোড়ানো লাশের একটি অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে দুপুরে ফারাজীপাড়া রোডের ড্রেনের পাশ থেকে দু’টি ব্যাগে থাকা তার মাথা ও দুই হাতসহ সাতটি খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করা হয়।

ময়না তদন্তের পর ৮ মার্চ বিকেলে নিহত সবুজের খণ্ডিত অংশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে লাশের মাথা, দুই হাতের চারটি খণ্ড ও পায়ের ওপরের অংশ থেকে গলা পর্যন্ত দুইটি অংশ ছিলো। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি গোলাম মোস্তফা গত ৯ মার্চ খুলনা সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top