আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনকে সুযোগ সন্ধানী আখ্যায়িত করে বলেছেন, তিনি এখন খুব গণতন্ত্র বলে চিৎকার করছেন। অথচ উনি ১/১১ সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। আইনজীবী হিসেবে তিনি সংশোধনী এনেছিলেন যে অনির্বাচিত সরকার দুই বছর থাকতে পারবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে ড. কামাল জড়িত থাকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জার্মনিতে ছিলেন। লন্ডনে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা তার সাথে যোগাযোগ করেন এবং প্রেস কনফারেন্স করে নিন্দা করার জন্য বলেছিলেন। উনি প্রেস কনফারেন্স করেন নাই। আমার কাছে ছবি আছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কামাল হোসেন আর কর্নেল হুদা এক অনুষ্ঠানে সামনা সামনি বসে পানীয় জাতীয় কী যেন খাচ্ছিলেন। উনি যে বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন না কিভাবে বলা যায়?
সংসদে গতকাল রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সিনিয়র সদস্য শেখ সেলিম এ কথা বলেন। শেখ সেলিম বলেন, খুনি মোস্তাক আর জিয়া বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে আমাদের স্বাধীনতাকে হত্যা করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হত্যা করেছে আমাদের সব কিছুকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের সামাজিক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
জিয়া পাকিস্তানের আনুগত্য একটি রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি নিশ্চিহ্ন করার জন্য তিনি একটার পর একটা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ড. কামালের সমালোচনা করে শেখ সেলিম বলেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করে জেলে গেছেন তার জন্য তিনি কান্না শুরু করেছেন। তার মুক্তি দিতে হবে। একজন আইনজীবী হয়ে উচ্চ আদালতের শাস্তি পাওয়া চোরকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি ড. কামালকে ভাড়াটিয়া নেতা আখ্যায়িত করে শেখ সেলিম বলেন, খালেদা জিয়ার এতিমের টাকা খেয়ে জেলে আর তারেক রহমান দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তারা নেতা খুঁজছেন। তারা এখন পরিত্যক্ত নেতা পাইছেন। যে নেতা বঙ্গবন্ধুর সময় একবার জিতেছিল।
তা ছাড়া জীবনে আর কোনো দিন জিতেননি। সেটাও বঙ্গবন্ধু ছেড়ে দিয়েছিলেন। কামাল হোসেন বিএনপিকে নিয়ে শেখ হাসিনার সাথে সংলাপে আসেন। তারা নির্বাচন বানচাল করার জন্য এসেছিল, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এসেছিল। তারা নির্বাচন করার জন্য আসেন নাই। জইসি মোহাম্মদের সাথে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে মিটিং করেছে। এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য এবং আরো অঘটন ঘটানোর জন্য।
কূটনৈতিকদের কাছে ছোটাছুটি আরম্ভ করেছে। নির্বাচন হবে আমাদের এখানে নমিনেশন দিচ্ছে লন্ডন থেকে সেখানে বাণিজ্য হচ্ছে তারেকের বিভিন্ন ব্যাংকে টাকা যাচ্ছে। ইইউ এবং জাতিসঙ্ঘের কাছে ধরনা দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যেভাবে চিকিৎসা দেয়া হয় তার চেয়ে বেশি চিকিৎসা দেয়া হয়েছে খালেদা জিয়াকে। খালেদা জিয়াকে পাঁচ তারকা মানের হোটেলের মতো জায়গায় রাখা হয়েছে। সেই রকম করে দেয়া হয়েছে। বিশ্বে কোথাও নাই কোনো আসামিকে তার বাড়ির কাজের লোক দেয়া হয়। তাকে তা দেয়া হয়েছে। ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা নিয়ে কুৎসা রটনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ সেলিম ফেসবুক নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানান। ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে, রেস্ট্রিকশন দিতে হবে। ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেও এসব করা হচ্ছে। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার তদন্তের একটি কমিশন গঠন করার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে কারা কারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে কমিশন করে আগামী প্রজন্মের জন্য হত্যার বিচার করা হোক।
গতকাল রাষ্ট্রপতির ভাষণের আলোচনায় আরো অংশ নেন মো: নাসিম, আবদুল মতিন খসরু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেন, জাতীয় পার্টির ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম মান্নান, সালমান এফ রহমান, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক মন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন, এ কে এম শাহজাহান কামাল, আকবর হোসেন পাঠান প্রমুখ।