বিএনপির শীর্ষ নেতাদের জামিন প্রসঙ্গ : রাষ্ট্রপক্ষের পরবর্তী শুনানি ১১ এপ্রিল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৪ শীর্ষ নেতাকে নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

বুধবার আদালতে বিএনপি নেতাদের পক্ষে শুনানি করে প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতে বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন বিএনপি নেতাদের সব কেসগুলো আলাদা আলাদাভাবে বিবেচনা করতে হবে। আমি বলেছি এটা পৃথকভাবে বিবেচনা করার কোনো কারণ নেই। কেন না, ইতিমধ্যে সবাই হাজির হয়ে গেছে এবং আগাম জামিনের আদেশ কার্যকর হয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আগাম জামিনের ব্যাপারে এ আপিল বিভাগের একটি সিদ্ধান্ত রয়েছে। যে সিদ্ধান্ত রয়েছে তা পরিবর্তন চেয়ে আমরা একটি নীতি নির্ধারণ করে দিতে বলেছি। আমরা পরিবর্তন চেয়ে একটি পলিসি নির্ধারণ করে দিতে বলেছি। কারণ সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তাতে হাইকোর্টের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। হাইকোর্টের ক্ষমতা খর্ব না করে জনস্বার্থে ওই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হওয়া দরকার। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের একটি গাইডলাইন প্রয়োজন। তিনি বলেন, আগের গাইডলাইনের কারণে আগাম জামিন সীমিত হয়েগেছে।

বুধবার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিএনপি নেতাদের মামলাগুলো পৃথক পৃথকভাবে বিবেচনা করতে হবে। তিনি বলেন, তাদের মামলাগুলো একটি একটি করে শুনানি হওয়া প্রয়োজন। এজন্য তিনি সময় প্রার্থনা করলে আদালত আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

শুনানি কালে বিএনপি নেতাদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জয়নুল আবেদীন, মাসুদ রানা প্রমুখ।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বিএনপির অন্য নেতারা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন ও বরকত উল্লাহ বুলু, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বানিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, ড্যাব নেতা এ জেড এমন জাহিদ হোসেন। এ ছাড়া একই মামলায় আসামি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

৬৬ ডিএলআর এর যে সিদ্ধান্ত চার সপ্তাহের বেশি জামিন দেয়া যাবে না। সেখানে উক্ত আসামীদের চার সপ্তাহের বেশি জামিন দেয়া হয়। তিনি বলেন, তখন নির্বাচনকালীন সময় অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঢালাওভাবে পুলিশ মামলা দেয়। এতে মৃত ব্যক্তি বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিকেও আসামী করা হয়। সে ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে চার সপ্তাহের বেশি জামিন দিতে পারেন। তিনি আরো বলেন, ৬৬ ডিএলআরের এই সিদ্ধান্ত ৫১ ডিএলআরের ওয়াহাব শাহের মামলার পরিপন্থী।

গত অক্টোবর মাসে রাজধানীর হাতিরঝিল ও খিলগাঁও থানায় করা নাশকতার দুই মামলায় হাইকোর্টে জামিন পান বিএনপি নেতারা। গত ১ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ। এছাড় খিলগাঁও থানায় বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অপর একটি নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top