বিমানবাহিনীতে চাকরির সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মার্কিন সিনেটর ম্যাকস্যালি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীর একজন যোদ্ধা পাইলট তিনি। পাশাপাশি প্রথম নারী হিসেবে দেশটির বিমানবাহিনীর হয়ে যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনেটর তিনি। দেশটির অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্য থেকে নির্বাচিত এই সিনেটরের নাম মারথা ম্যাকস্যালি। বুধবার এই মার্কিন সিনেটর মারথা ম্যাকস্যালি বলেছেন, মার্কিন বিমানবাহিনীর পাইলট হিসেবে চাকরি করার সময় তার সিনিয়র এক অফিসারের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন তিনি।

কেবল তাই নয়, এ বিষয়ে কথা বলতে যখন তিনি মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে যান, তখন আরো বিরূপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি। তার ভাষায়,‘ধর্ষণের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়ে আমার মনে হল তাদের কাছে এ বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক এবং সেখানে পরিবেশ এমন হলো যে, ধর্ষণের অভিযোগ করতে এসে আমি আবারো মানসিকভাবে ধর্ষণের শিকার হলাম।’

বর্তমানে ৫২ বছর বয়সী মার্কিন সিনেটর মারথা ম্যাকস্যালি একটানা ২৬ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে চাকরি করেছেন এবং একটি ফাইটার স্কোয়াড্রনের কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্বপালন করেছেন তিনি। মার্কিন সামরিকবাহিনীতে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে বুধবার দেশটির সিনেটের সাব-কমিটিতে শুনানীর সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই মার্কিন সিনেটর।

সিনেটর ম্যাকস্যালি বলেন,‘আমি নিজে সামরিকবাহিনীতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছি। কিন্তু আরো অনেক নিপীড়িত কর্মীর মতো আমি এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে পারিনি।

তিনি আরো বলেন,‘ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অনেক নারী ও পুরুষের মতো আমি সামরিকবাহিনীর সিস্টেম বা পরিবেশের উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। আমি নিজেকেই অপরাধী বা দোষী মনে করতাম। ঘটনার পর সব কাজে আমি লজ্জিত ও দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ি। আমি ভামতাম আমার শক্তি আছে কিন্তু নিজেকে সবসময় অসহায় মনে হতো।’

সিনেটর মারথা ম্যাকস্যালি ২০১০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনীতে চাকরি করেন এবং কর্ণেল পদে দায়িত্বপালন করার সময় তিনি অবসরে যান। তিনি বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অনেক বছর নিশ্চুপ ছিলেন তিনি।

মারথা ম্যাকস্যালি বলেন,‘কিন্তু পরে যখন দেখলাম সামরিকবাহিনীর ভিতরে এই ধরণের অপকর্ম বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে, তখন আমারও মনে হলো- মানুষকে জানানো দরকার যে, আমিও এই নির্যাতনের শিকার।’

মারথা ম্যাকস্যালি মার্কিন বিমানবাহিনী একাডেমির নবম ক্লাসে ছিলেন। তিনি বলেন, সেখানে যৌন নিপীড়ন ও নির্যাতনের উপস্থিতি খুবই ব্যাপক। আর যারা ধর্ষণ ও নিপীড়নের শিকার হন তারা অধিকাংশই চুপ থাকেন।

অবশ্য তিনি একাডেমিতে প্রশিক্ষণের সময় নাকি সক্রিয় চাকরিরত অবস্থায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন- সে বিষয়ে কিছু বলেননি। পাশাপাশি বক্তব্যে তিনি কোনো অভিযুক্তের নামও বলেননি। সূত্র : আল জাজিরা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top