মাঝে মধ্যেই শোনা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কুরআন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের রেকর্ড হচ্ছে। কেউবা হাতে সেলাই করে কুরআন লিখছেন, কেউবা কাঠে খোদাই করে তৈরি করছেন কুরআনের পাণ্ডুলিপি। আবার বৃহত্তম বা ক্ষুদ্রতম কুরআনের বিভিন্ন প্রতিলিপি তৈরি করেও তাক লাগিয়ে দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের কুরআন প্রেমিক কিছু মানুষ।
মুসলিম জনসংখ্যার দিক দিয়ে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন রেকর্ডের কথা শোনা যায় খুব কমই।
বাংলাদেশের মানুষ যে ধর্মপ্রাণ নন বা তারা যে এমন কিছু করতে পারেন না, তা নয়। বরং এদেশের মানুষের স্বভাবজাত সংকোচবোধও হয়তো এর জন্য দায়ী। নইলে বরিশালের হুমায়ুন সেই ২০১০ সালে পুরো কুরআন লেখার পরও কেন সে সম্পর্কে জানতে পারেনি এ দেশের মানুষ?
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বারড়িয়া গ্রামের মানুষ মোঃ হুমায়ুন কবির সুমন। নিজ হাতে যিনি লিখেছেন পুরো পবিত্র কুরআন। অথচ তিনি মাদরাসায় পড়েননি। কিন্তু ইচ্ছাশক্তি থাকলে তাকে ঠেকিয়ে রাখা যে যায় না, তার প্রমাণ দিয়ে মাত্র তিন বছরে হাতে লিখেছেন মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্ত এই কুরআন। এর জন্য অবশ্য আগে আরবি শিখে নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৯ সালে এসএসসি পাস করার পর হুমায়ুন কুরআনুল কারিম লেখার উদ্দেশ্যে আরবি লেখা শিখেছেন। কিন্তু কুরআন লেখার কাজটি শুরু করেন ২০০৭ সালে। তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০১০ সালে পুরো কুরআন লেখা সম্পন্ন করেন হুমায়ুন। শুধু কুরআনের শব্দ বা বাক্য লেখা নয়, অমূল্য এই শিল্পকর্মটির পৃষ্ঠা বিন্যাস ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ক্যালিওগ্রাফিও ব্যবহার করেছেন তিনি।
বরিশালের তরুণ প্রতিভাবান হুমায়ুনের এখন ইচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতের লেখা কুরআনের পাণ্ডুলিপি তৈরি করবেন তিনি। হুমায়ুন কবির সুমন বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বারড়িয়া গ্রামের মোঃ রজব আলী শিকদারের পুত্র।
বর্তমানে তিনি ঢাকার গাউছিয়া মার্কেটের একটি শো-রুমের সহকারী ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হুমায়ুন কবির সুমন নিখুঁত, নির্ভুল ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা পবিত্র কুরআনুল কারিমের পাণ্ডুলিপি তৈরি করায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বরিশালের আলেম, ওলামা ও ইমাম সমাজের নেতৃবৃন্দ।