পাকিস্তানে বিধ্বস্ত মিগ-২১ বিমানের পাইলট অভিনন্দন বর্তমান দেশে ফিরেছেন। তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আরো হাজারো মানুষ। কিন্তু এখনই বাড়ি ফিরতে পারবেন না এ পাইলট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিনন্দন অসীম সাহসের পরিচয় দিয়েছেন, সন্দেহ নেই। কিন্তু যেহেতু শত্রুদেশের হেফাজত থেকে তিনি ফিরছেন, সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই অনেক ধরনের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাকে।
এ ব্যাপারে কেউ স্পষ্টভাবে না বললেও জানা গেছে, ওয়াগা সীমান্ত থেকে সরাসরি বাড়ি যেতে পারবেন না অভিনন্দন। প্রথমে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে বিমানবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগে। প্রথমেই তার শারীরিক ফিটনেস দেখা হবে।
এছাড়া তার শরীরের কোথাও কোনো চিপ বসানো হয়েছে কি না তা-ও দেখা হবে। কারণ বর্তমান প্রযুক্তির যুগে ধারণা করা হয়, বন্দিদের শরীরে মাইক্রোচিপ ঢুকিয়ে দেয়া হয়, পরে আড়ি পেতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয় শত্রুপক্ষ। অভিনন্দনের শরীরেও সেরকম কোনো চিপ বসানো হয়েছে কি না, তা স্ক্যান কেরে দেখা হবে। মনোবিদের কাছেও নিয়ে যাওয়া হবে অভিনন্দনকে। বন্দি থাকা অবস্থায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত তথ্য পেতে তাকে কোনো অত্যাচার করা হয়েছে কি না তাও জানার চেষ্টা করা হবে। পাকিস্তানে কোনও ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে কি না দেখা হবে তা-ও।
সাধারণভাবে এ ধরনের পরিস্থিতিতে তদন্ত করতে আনা হয় ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) ও রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র) কর্মকর্তাদেরও। তবে পাইলটদের তাদের হাতে তুলে দেয় না বিমানবাহিনী। তাই অভিনন্দনের ক্ষেত্রে তা না-ও হতে পারে।
পাকিস্তানে পা রাখা থেকে ওয়াগা সীমান্ত পার হওয়া অর্থাৎ পাকিস্তানের মাটিতে থাকা প্রতিটি মুহূর্তের বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে অভিনন্দনকে।
শত্রুপক্ষের হাতে বন্দি ছিলেন অভিনন্দন। সেখানে তাঁর সঙ্গে কোনও গোপন রফা হয়েছে কি না পাকিস্তানের, তথ্য পাচারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতে ফিরে এসেছেন কি না অভিনন্দন, দফায় দফায় জেরা করে তাও নিশ্চিত করবেন গোয়েন্দারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, এসব জিজ্ঞাসাবাদ ও ডাক্তারি পরীক্ষায় নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রমাণ না করতে পারলে আর কোনোদিনই হয়তো যুদ্ধবিমানে সওয়ার হতে পারবেন না অভিনন্দন। সে ক্ষেত্রে ডেস্কের কাজে বসিয়ে দেয়া হতে পারে তাকে। তবে এক্ষেত্রে তার সঙ্গে কোনোরকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে না।
কাশ্মিরের পুলওলামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪৪ জন সিআরপিএফ সদস্য নিহত হওয়ার পর ঘটনার ধারাবাহিকতায় গত বুধবার পাকিস্তান ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সেনাঘাঁটিতে বোমাবর্ষণ করে দেশে ফিরে যায়। পাকিস্তানের এ পদক্ষেপের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে আবারো প্রতিবেশী দেশটির আকাশসীমায় প্রবেশ করে ভারত। পাকিস্তানের সশস্ত্রবাহিনী এ সময় গুলি করে তাদের দুটি বিমান ভূপাতিত করে এবং এর পাইলট অভিনন্দনকে গ্রেফতার করে।