আকাশ পথে পাইলটকে আনতে চেয়েছিল ভারত, অনুরোধ প্রত্যাখান পাকিস্তানের

পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে ভারতের অনুরোধ প্রত্যাখান করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার পাইলট অভিনন্দনকে ফেরত দেয়া হবে- ইমরান খানে এমন ঘোষণার পর ভারত অনুরোধ জানিয়েছিল আকাশ পথে পাইলটকে ফেরত দিতে। কিন্তু পাকিস্তান সেই অনুরোধ প্রত্যাখান করে বলেছে ওয়াগা-আত্তারি সীমান্ত ক্রসিংয়েই তাকে ফেরত পাঠানো হবে।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভারতের পক্ষ থেকে ইসলামাবাদকে বলা হয় স্থল বন্দর দিয়ে নয় তারা আকাশ পথে উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ফেরত আনতে চায়। কিন্তু মাঝরাতে ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে নয়া দিল্লিকে জানানো হয়, এই অনুরোধ রাখা সম্ভব নয়। স্থল বন্দর দিয়েই পাইলট অভিনন্দনকে হস্তান্তর করা হবে।

ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ চেয়েছিল একটি বিশেষ বিমানে করে অভিনন্দনকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু সেই অনুরোধ রাখেনি পাকিস্তান সরকার।
গত বুধবার পাকিস্তানের হামলা চালাতে গিয়ে আটক হয়েছেন ভারতীয় যুদ্ধবিমানের পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় তার বিমান ধ্বংস হয় এবং তিনি প্যারস্যুট দিয়ে লাফিয়ে জীবন বাঁচান। এরপর মাটিতে নামার পর স্থানীয়রা তাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। তাকে শুক্রবার ভারতের হাতে তুলে দেবে পাকিস্তান।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে বলেছেন, এর মাধ্যমে ইসলামাবাদ নয়া দিল্লিকে শান্তির বার্তা দিতে চায়। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ বন্ধে যে কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে সব সময় আগ্রহী।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ভারতের জি নিউজ অনলাইন জানিয়েছে, বিকেলে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে অভিনন্দনকে হস্তান্তর করা হতে পারে। তাকে গ্রহণ করতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি উচ্চপদস্থ দল ছাড়াও সীমান্তের ভারতীয় অংশে জড়ো হয়েছেন অনেক ভারতীয় নাগরিক। এদিকে অভিনন্দনের বাবা-মা চেন্নাই থেকে দিল্লিগামী বিমানে চড়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। তারা দিল্লিতে মিলিত হবেন পুত্রের সাথে।

এদিকে নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে পাকিস্তানের ইংরেজী দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলেই ভারতীয় পাইলটকে ফেরত দেয়ার সব কিছু চূড়ান্ত হয়। পাকিস্তানে নিয়োজিত ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক কর্মকর্তা তার সাথে থাকবেন।

ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল অভিনন্দনকে গ্রহণ করবে পাকিস্তানের কাছ থেকে। তবে তাকে সরাসরি ভারতের হাতে নাকি ১৯৯৯ সালের মতো রেড ক্রসের মাধ্যমে ভারতের হাতে তুলে দেবে পাকিস্তান সেটি এখনো জানা যায়নি।

এর আগে ১৯৯৯ সালেও কারগিল যুদ্ধের সময় এক ভারতীয় পাইলট আটক হয়েছিলেন পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে। তাকেও ফেরত দেয়া হয়েছিল ওয়াগা বর্ডার থেকে। দুই দেশের পাঞ্জাব প্রদেশের সীমান্তে পাকিস্তানি গ্রামটির নাম ওয়াগা, আর ভারতীয় অংশের নাম আত্তারি। ভারতীয় বিমান বাহিনীর ওই পাইলটের নাম ছিলো কাম্বামতী নচিকেতা। সেই দিনটি ছিলো ২৭ মে ১৯৯৯। সেদিন ভারতীয় বিমান ২৬ বছর বয়সী বাহিনীর ফ্লাইট লেফট্যানেন্ট কাম্বামতী মিগ-২৭ যুদ্ধ বিমান নিয়ে পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়েছিলেন। সে সময়ও পাকিস্তানের হামলায় তার বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top