উচ্ছ্বসিত ভারত এখন চরম উদ্বিগ্ন

একদিনের ব্যবধানে পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। পাল্টে গেছে ভারতের সরকার থেকে সাধারণ মানুষ সবার দাবির ধরন।

মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে সেখানের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছিল ভারত। ২০০-৩০০ ব্যক্তিকে তারা হত্যা করেছিল বলেও দাবি করেছিল ভারত কর্তৃপক্ষ। পাকিস্তান তাদের বেশিরভাগ দাবিই অস্বীকার করে। কিন্তু তাতে আটকায়নি কিছুই। আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিল গোটা ভারত। আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ ইত্যাদির ছবি ফলাও করে প্রচারিত হয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

কিন্তু একদিন পরই ভারতের অভ্যন্তরে গিয়ে হামলা, পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় বিমানকে গুলি করে নামানো ইত্যাদিতে হতভম্ব হয়ে পড়েছে ভারত। পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা ভারতের দুটি যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামিয়েছে। গ্রেফতার করেছে একজন পাইলটকে। ভারত প্রথমে পাকিস্তানের সে অভিযোগ উড়িয়েই দিয়েছিল। কিন্তু তাদের পাইলটের নাম ঠিকানা প্রকাশের পাশাপাশি যখন তার সাক্ষাতকার প্রচার করে তখন উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে ভারত।

আগের দিন পুরো পাকিস্তানকে জ্বালিয়ে দেয়া হোক, এমন আওয়াজও উঠেছিল যেখান থেকে, সেখানে মঙ্গলবার থেকেই পাল্টে গেছে ভারতের সুর। ভারতবাসীর এখন একটাই প্রার্থনা সুস্থ শরীরে দেশে ফিরুন পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভূপাতিত হওয়া মিগ ২১ বাইসন যুদ্ধবিমানের চালক উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান।

পাকিস্তানকে এ মুহূর্তে গুড়িয়ে দেয়া নয় নয় বরং তাদের হেফাজতে থাকা অভিনন্দনের ‘দ্রুত ও নিরাপদ মুক্তি’র জন্য ব্যবস্থার কথা জানিয়েছে সাউথ ব্লক। একইসঙ্গে জেনেভা চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিনন্দনকে নির্যাতন করা নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে।

পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে অন্য কিছু বাদ দিয়ে অভিনন্দনের ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন সাউথ ব্লকের কর্মকর্তারা। মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জেনেভা চুক্তির।

পাকিস্তান জানিয়েছিল, ভারতের দু’টি বিমান গুলি করে নামিয়েছে তারা এবং এক পাইলট তাদের হাতে ধরা পড়েছেন। ভারত প্রথমে তাদের দাবি অস্বীকার করলে পাইলট উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের তিনটি ভিডিও প্রকাশ করে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। তখন ভারত পাকিস্তানের দাবি স্বীকার করে নেয়।

ভিডিওর প্রথমটিতে জঙ্গলে ঘেরা একটি নালার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই পাইলটকে। তাকে স্থানীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান পাকিস্তানের সেনা সদস্যরা। দ্বিতীয় ভিডিওটিতে চোখ বাঁধা অবস্থায় রক্তাক্ত অভিনন্দনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে অভিনন্দন নিজের নাম ও সার্ভিস নম্বর জানান। পাশাপাশি জানতে চান, তিনি কি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন? তৃতীয় আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি পাকিস্তান কর্তৃপক্ষকে আতিথেয়তা ও সেবার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

একদিনের ব্যবধানে এভাবে পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় চরম বিপদে রয়েছে নির্বাচনের জন্য যুদ্ধকে টেনে আনা মোদি সরকার।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top