ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে ইরানের বার্তা সংস্থা ইরনা। সোমবার রাতে নিজের ইনস্টাগ্রাম পেজে আকস্মিকভাবে এ ঘোষণা দেন তিনি। তবে তিনি এর পেছনে কোনো কারণের কথা উল্লেখ করেননি।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, গত ৬৭ মাস ধরে দায়িত্ব পালনের সময় সরকার ও জনগণের কাছ থেকে যে সহযোগিতা পেয়েছি সেজন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে যেতে না পারা এবং এতদিন দায়িত্ব পালনের সময় যেসব ভুলত্রুটি হয়েছে সেজন্য আমি সবার কাছে বিনীত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইয়্যেদ আব্বাস মুসাভি বার্তা সংস্থা ইরনাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আর কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সাইয়্যেদ মুসাভি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফের পদত্যাগ করার খবর নিশ্চিত করলেও প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন কি না সে সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যায়নি। এছাড়া এ বিষয়ে আয়াতুল্লাহ খামেনিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
৫৯ বছর বয়সী জাভেদ জারিফ যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করেছেন। এবং ইউনিভার্সিটি অব ডেনাভার থেকে আন্তর্জাতিক আইন বিসয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।
২০১৩ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনোনীত করেন। ২০১৭ সালে পুননির্বাচিত হওয়ার পর জারিফকে তার পদেই বহাল রাখেন প্রেসিডেন্ট রুহানি।
২০১৫ সালে পাশ্চাত্যের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মাদ জাভেদ জারিফ। তবে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এ সমঝোতাকে অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর বলে আখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। অবশ্য তার আহ্বান সত্ত্বেও চুক্তির অন্য পক্ষগুলো এ চুক্তি থেকে সরে যায়নি।
তবে মার্কিন এ পদক্ষেপের পর থেকেই জাভেদ জারিফসহ পুরো ইরান সরকারই অভ্যন্তরীণভাবে চাপের মুখে আছে। সোমবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সাথে সাক্ষাত করেন। তবে সে সময় জাভেদ জারিখ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।