সোনা আমদানির লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে

এবার সোনা আমদানির জন্য আগ্রহীদের লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য আমদানিকারককে বেশ কিছু শর্ত দেয়া হচ্ছে। সোনা আমদানির লাইসেন্স পেতে হলে গ্রাহককে এক কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধন দেখাতে হবে। এক হাজার বর্গফুটের অফিস দেখাতে হবে। একই সাথে গ্রাহক ঋণ বা করখেলাপি হতে পারবেন না। লাইসেন্সধারীদের দায়িত্ব ও কর্তৃব্য নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। এটি চূড়ান্ত হলে শিগগিরই তা জারি করা হবে।

জানা গেছে, এত দিন বৈধভাবে কেউ সোনা আমদানি করতেন না। চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে সোনা আসত। মাঝে মধ্যে শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ার পর জানা যেত চোরাচালানিদের কারবার। স্বর্ণের চোরাচালান ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও তা থেমে ছিল না। গত বছরের আপন জুয়েলার্সের ঘটনার পর সারা দেশে সোনার গয়না বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল জুয়েলারি মালিক সমিতি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈধ পথে দেশে সোনা না আসায় এক দিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারায়, অপর দিকে পাচার হয়ে যায় দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার সোনা আমদানি উন্মুক্ত করার জন্য স্বর্ণ নীতিমালার ওপর একটি গেজেট প্রকাশ করে। গত বছর ২৯ অক্টোবর এ নীতিমালা জারি করার পর কিভাবে সোনা আমদানি করা হবে, কারা আমদানি করবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর দেয়া হয়।

স্বর্ণ নীতিমালার ৩.১ ধারায় বলা হয়েছে, ‘ বর্তমানে স্বর্ণ আমদানি রীতি ও পদ্ধতির অতিরিক্ত হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা পূরণে অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানির নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে। অনুমোদিত ডিলার নির্বাচনের কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সম্পন্ন করা হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এ জন্য গাইডলাইন নির্ধারণ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্বর্ণ নীতিমালার গেজেট প্রকাশের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য ডিলার নির্বাচন করা আবশ্যিক হয়ে পড়েছে। সরকার ওই গেজেটের আলোকেই সোনা আমদানির লাইসেন্স দেয়ার জন্য নীতিমালা জারি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য নীতিমালার একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।

খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, সোনা আমদানির লাইসেন্স পেতে হলে কমপক্ষে এক কোটি টাকার বৈধ অর্থ দেখাতে হবে, যা পরিশোধিত মূলধন আকারে থাকবে। সোনা আমদানির লাইসেন্সের জন্য আবেদনকারী কোনোভাবেই ব্যাংকঋণ বা করখেলাপি হতে পারবেন না।

লাইসেন্স দেয়া হবে তিন বছরের জন্য। তিন বছর পর পর লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। প্রাথমিকভাবে লাইসেন্সের ফি নির্ধারণ করা হবে ১০ লাখ টাকা এবং নবায়ন ফি নির্ধারণ করা হবে ৫ লাখ টাকা। তবে লাইসেন্স পেতে হলে এক হাজার বর্গফুটের একটি অফিস দেখাতে হবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নীতিমালার খসড়া ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন হলে শিগগিরই তার একটি সার্কুলার জারি করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, সোনা আমদানির লাইসেন্স দেয়া হলে বৈধ পথে সোনা আমদানি বাড়বে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় বেড়ে যাবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top