ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট

কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলার মতো ঘৃণ্য ঘটনার নিন্দা করেছে ইন্টান্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’র (আইসিসি) সদস্য দেশগুলি। সন্ত্রাসবাদকে সাহায্য দেয়ায় দেশের সঙ্গে আইসিসির সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত। ঠিক এমনটা লিখেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সিইও রাহুল জোহরি চিঠি পাঠিয়েছেন আইসিসিতে।

নাম উল্লেখ না করলেও তিনি যে পাকিস্তানকেই লক্ষ্য করে কথাগুলো বলেছেন তা আর এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কারও বুঝতে অসুবিধা হয় না।

সেই দিঠিতে দাবী করা হয়েছে, পাকিস্তান বিশ্বকাপে খেললে ভারতীয় ক্রিকেটার, সমর্থকদের নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখা দেবে। যদিও এক দেশের সদস্যপদ বাতিলের জন্য আরেক সদস্য দেশের এমন প্রস্তাব বিরল ঘটনা।

বিসিসিআই চিঠিতে লিখেছে, আমরা আসন্ন বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তায় রয়েছি। আইসিসি এবং ইসিবি ভারতের ক্রিকেটার, আম্পায়ার ও সমর্থকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করবে বলেই আশা রাখি।

১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বোমা হামলার পর ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। এমন জঘন্য ঘটনার পর থেকেই ১৬ জুন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচ না খেলার দাবি জোরালো হচ্ছে। ২২ ফেব্রুয়ারি বিসিসিআই কার্যকরী সমিতির সভায় ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় ভারতের খেলা বা না খেলার সিদ্ধান্ত পাকা না হলেও পরদিনই আইসিসির কাছে উদ্বেগের কথা জানায় বিসিসিআই।

সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর চেয়ারম্যান বিনোদ রাই, ডায়না এডুলজি এবং নবনিযুক্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল রবি থোগড় এই প্রসঙ্গে আইসিসির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

পরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সেই চিঠির জবাব দিয়েছেনন আইসিসির চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহর। তিনি জানিয়ে দিলেন, প্লেয়ারদের নিরাপত্তা সব সময় সবার আগে। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা প্রসঙ্গে ভারতের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে মতামত জানানো হয়েছিল। তার জবাবে শশাঙ্ক মনোহর বলেন, ‘‘ছিলই এবং থাকবে সবার আগে।”
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ৩০ মে থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে আইসিসি বিশ্বকাপ।

শশাঙ্ক মনোহর টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘‘আমি বিসিসিআই-এর চিঠি পেয়েছি। নিরাপত্তা আমাদের কাছে সবার আগে এবং এটাই ছিল আইসিসি কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ।”

এর সঙ্গে তিনি আরও জুড়ে দেন, ‘‘আইসিসি যখন ২ মার্চ দুবাইয়ে বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তখন আমরা বিসিসিআইকে দেখিয়ে দেব আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা যা বিশ্বকাপের জন্য রাখা হয়েছে। তা হলেই তারা নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারবে। সব বোর্ডেরই এ বিষয়ে চিন্তা থাকাটা স্বাভাবিক।”

আইসিসিকে লেখা চিঠিতে সিওএ চেয়ারম্যান বিনোদ রাই বলেন, ‘‘আমরা দুটো বিষয় নিয়ে আমাদের চিন্তার কথা আইসিসিকে জানাতে চাইছি। বিশ্বকাপের সময় ক্রিকেটারদের জন্য শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং বিশ্বের ক্রিকেটকে জানানো আমরা এমন একটি দেশের সঙ্গে ক্রিকেট সম্পর্ক ‌রাখছি যাদের দেশে সন্ত্রাসবাদের জন্ম হয়।”

কিন্তু এখনও নিশ্চিত নয় বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হবে কিনা। আইসিসি যাই ভরসা দিক না কেন, ভারত সরকার এই বিষয়ে শেষ কথা বলবে বলে জানিয়েছে সিওএ।

তিনি জানিয়েছিলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আমরা কথা বলছি ১৬ জুনের ম্যাচ নিয়ে। এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top