হুঙ্কার শেষ : নরম সুরে ফিরে গেলেন মোদি

পুলওয়ামা হামলার পর মোদি হুঙ্কার দিয়ে ওঠেছিলেন, পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, আলোচনার সুযোগ শেষ। আর নয়। পাকিস্তানকে জবাব দিতে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সপ্তাহ না পেরোতেই সুর নরম হয়ে গেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে মোদি বলেন, সামগ্রিক আলোচনা যেখানে শুরু হতে পারে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সে রকম পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ।’

অথচ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে যৌথ বিবৃতিতে যখন পুলওয়ামার ঘটনার কোনো নিন্দা জানানোর কথা ছিল না, তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনায় মেতেছিলেন পুরো ভারতবাসী। এখন এখন কূটনৈতিক মারপ্যাচে পড়ে মোদিও তাই করলেন। বলা চলে ইমরানের পদাঙ্কই অনুসরণ করলেন তিনি।

ভারত এখন বলছে, তারা পুলওয়ামা পরবর্তী পরিস্থিতি সামলাতে কূটনীতির পথেই হাঁটছে। দিল্লি জানিয়েছে, ২০১৪ সালের মে মাস থেকে পাকিস্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থানে মোদি ব্যক্তিগতভাবে যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন সৌদি যুবরাজ তার প্রশংসা করেছেন।

এতদিন ধরে ভারত বলে আসছিল, পাকিস্তানের সাথে ভারতের সম্পর্কে তৃতীয় কোনো পক্ষকে হস্তক্ষেপ করতে দেয়া হবে না। সৌদি যুবরাজ ভারত সফরের আগেই দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তারা দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করবে। যুবরাজের সফরে সে নিয়েই কথা হয়েছে। আর যৌথ বিবৃতিতে যা জানানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, মোদি সরকার আগের সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।

দিল্লি জানায়, তারা সৌদি যুবরাজের কাছে এ হামলার সাথে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ উপস্থাপন করে। তখন যুবরাজ পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করেই বলেন, আমাদের সাধারণ উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। এক্ষেত্রে ভারত ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমরা সহযোগিতা করবো, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ থাকে। আর এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকাকে আমরা সমর্থন করি। তবে এক্ষেত্রে পুরোপুরি ফল পেতে হলে সন্ত্রাসবাদ পরিকাঠামো ও এসব সংগঠনের অর্থের যোগান বন্ধ করতে হবে। আর এক্ষেত্রে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় হবে।

এ সময় যুবরাজের সাথে তাল মিলিয়ে মোদিও বলেন, যে সব সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করছে, তাদের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতি হামলা চালানো হয়। এতে মারা যায় ওই বাহিনীর ৪৪ জন সদস্য। পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন জয়েশ-ই মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। পরে ভারত এ জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে।

পাকিস্তানও পাল্টা জবাবে জানায়, এ ধরনের উস্কানিমূলক কথাবার্তা না বলে বরং প্রমাণ থাকলে দিক। অভিযোগ সত্যি হলো আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top