ভারতের ইতিহাসে সবথেকে বড় আত্মঘাতী হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত পাকিস্তান-ভারত। ভয়ঙ্কর এই হামলাতে ৪০ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন মহল হুমকি দিচ্ছে, এর জন্য পাকিস্তান দায়ী এবং এর পাল্টা জবাব দেয়া হবে। সার্জিকাল স্ট্রাইক কিংবা সরাসরি যুদ্ধের কথাও বলছে অনেকে। ভারতের যেকোনো ধরনের হামলার মুখে পাকিস্তানও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
আর তা থেকে মঙ্গলবার সে দেশের সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কার্যত ভারতকে যুদ্ধ থেকে সতর্ক করেছেন ইমরান। তার দাবি, যুদ্ধ মানুষ শুরু করলেও কোথায় গিয়ে যে তা থামবে কেউ বলতে পারবে না। শুধু মন্তব্য করাই নয়, ভারতের হামলার আশঙ্কায় জাতিসঙ্ঘেরও দ্বারস্থ হচ্ছে পাকিস্তানও।
তবে সেখানেই থামতে চাইছে না পাকিস্তান। আর তাই জরুরি বৈঠকে বসছে পাকিস্তান। চলতি সপ্তাহেই সে দেশের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। যেভাবে টেনশন বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে পাকিস্তানের রণকৌশল কি হয় তা ঠিক করতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই বৈঠক ডেকেছে বলে জানা গেছে। সেখানে ইসলামাবাদের পাকিস্তানের প্রশাসনিক স্তরে সমস্ত কর্মকর্তাকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
গত কয়েক দিন আগে পুলওয়ামাতে ভয়ঙ্কর আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে। সেই হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ সৈন্য নিহত হয়। ভারত দাবি করেছে, এই হামলার জন্য দায়ী পাকিস্তানভিত্তিক জৈশ-ই-মোহাম্মদ। তবে পাকিস্তান বলছে, বিনা প্রমাণে এই দাবি মেনে নেয়া যায় না। তারা পর্যাপ্ত প্রমাণ দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ভারতকে শান্ত থাকতে বলল চীন
একদিকে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কে পারদ চড়ছে, তার মধ্যেই শান্ত থাকতে বলল চীন।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় সিআরপিএফ জওয়ানদের মৃত্যুর পর উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে দুই দেশের। হামলা, পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দেয়া হচ্ছে একে অপরকে। এর মধ্যেই ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম দেখাতে বলল চীন। যত দ্রুত সম্ভব আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে দু’পক্ষকে নিজেদের যাবতীয় বিরোধ মিটিয়ে নিতেও বলেছে চীন।
আগেই হামলার দায় নিয়েছে জৈশ-ই-মোহাম্মদ গোষ্ঠী যারা পাকিস্তানের মদতপুষ্ট। এই ইস্যুতে গত শুক্রবার পাকিস্তানকে দেয়া সবচেয়ে পছন্দের দেশের মর্যাদা (মোস্ট ফেভারড নেশন) প্রত্যাহার করে ভারত, পাশাপাশি পাকিস্তান থেকে এ দেশে আসা পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ আমদানি শুল্কও বৃদ্ধি করে।
এই প্রেক্ষাপটেই চীনা পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র গেং শ্যুয়াং বেইজিংয়ে বলেন, পাকিস্তান ও ভারত, উভয়েই দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এই অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতার স্বার্থেই দুটি দেশের মধ্যে স্থিতিশীল দ্বিপক্ষীয় বোঝাপড়া থাকা জরুরি। দক্ষিণ এশিয়ায় সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে যাকে পুষ্ট করা, বহাল রাখা উচিত সব পক্ষের। পাকিস্তান ও ভারত সংযম দেখাবে, আলোচনায় সামিল হবে, যত শিগগির সম্ভব প্রাসঙ্গিক সমস্যাগুলির শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করে ফেলতে পারবে বলে চীন আশা করছে।