সারা দেশে হরতাল-অবরোধে ৪২ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগে দায়ের করা হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে আগামী ২৬ মে। মঙ্গলবার এ মামলা সংক্রান্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেননি। সে জন্য ঢাকার মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন মামলার নথি পর্যালোচনা করে উপরোক্ত মর্মে তারিখ ধার্য্য করেন।
মামলার অপর ৩ আসামী হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহম্মেদ, প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ ও হরতালে গত ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত (২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি) ৪২ জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে গত ২৭ জানুয়ারি ট্রাকচালক আব্দুর রহমান ও বকুল দেবনাথ, ১৩ জানুয়ারি আড়াই বছরের শিশু সাফির ও জেসমিন আক্তার, ১৫ জানুয়ারি স্কুলছাত্র রাজন আলী, বাসচালকের সহকারী তোফাজ্জল ও ট্রাকচালকের সহকারী সোহাগ বিশ্বাস রয়েছেন। এসব হত্যাকান্ডের দায়ভার অবরোধ ও হরতাল আহ্বানকারী ২০ দলীয় জোটের প্রধান বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এবং অপর তিন আসামির ওপর বর্তায়।
অন্যদিকে, অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ও হরতাল দিয়ে মানুষ হত্যা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার সামিল হিসেবে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধের মধ্যে পড়ে। ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী মামলাটি দায়ের করেন। ওই দিন আদালত গুলশান থানার ওসিকে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। দণ্ডবিধি ৩০২, ১০৯ ও ১২০(বি) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
হোলি আর্টিজানে হামলা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ ২৬ ফেব্রুয়ারী
এদিকে ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে ২৬ ফেব্রুয়ারী। মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য্য ছিল। এদিন রাষ্ট্রপক্ষ কোন সাক্ষী আদালতে হাজির করতে না পারায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মোঃ মজিবুর রহমান শুনানী শেষে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য উপরোক্ত মর্মে তারিখ ধার্য্য করেন।
এই মামলার আসামিরা হলেন- হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, ঘটনায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবি নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ।
গত বছরের ৮ আগস্ট ৮ আসামির বিরুদ্ধে দাখিল করা চার্জশিট গ্রহণ করে আদালত। চার্জশিটে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এরপর গত ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির এই মামলার চার্জশিট দাখিল করে।