রোকন বাপ্পি, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে (৯ম-২০তম) বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধুমাত্র অনগ্রসর গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা সর্বোচ্চ ৫% রাখার দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি সংস্কার ও দেশব্যাপী পালিত বাংলা ব্লকেড’এ অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়ক জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সমৃদ্ধ বাসসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ করে ব্লকেড তৈরি করে। এসময় বৃষ্টি উপেক্ষ করেও আন্দোলন চালিয়ে যায় তারা।
আজ বুধবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে পরে ময়মনসিংহ, ত্রিশাল জিরো পয়েন্টে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় সেখানে অবস্থান নিয়ে কোটা বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
বিদ্রোহীর আঙিনায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘মেধা না কোটা, কোটা কোটা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘কোটা ব্যবস্থার অবসান, ছাত্র সমাজের জয়গান’, ‘নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর’ এমন নানা স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলে শিক্ষার্থীরা। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
শিক্ষার্থীরা জানান, সব মিলিয়ে ৫৬ ভাগ কোটা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেধার অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। কোটা বাতিল নয়, কোটা সংস্কার চান। দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতবন্ধিদের জন্য সব মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৫ ভাগ কোটা রাখার আহ্বান জানান তারা। আজ উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন, সেটা তাঁরা মানেন না বলেও অবহিত করেন। তাঁদের আন্দোলন আদালতের সঙ্গে নয়। নির্বাহী বিভাগ ও সংসদ থেকে কোটা সংস্কারের আদেশ চান। তা না হলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে আন্দোলন চলবে দাবি না মানা পর্যন্ত।
এসময় কোটা সংস্কার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে শর্ট পিচ ক্রিকেট খেলায়ও মেতে ওঠে অবরোধকারী শিক্ষার্থীদের একাংশ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে কোটা প্রথা সংস্কারের আন্দোলনের পর সরকার সকল ধরণের কোটা বাতিল ঘোষণা করে। পরে ১ম ও ২য় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিটের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রটিকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় উচ্চ আদালত।