আগামী ৩ ডিসেম্বর (শনিবার) রাজশাহী নগরীর মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপির। তবে এই সমাবেশের আগে ১০ দাবিতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগের সব জেলার বাস-ট্রাক (যাত্রীবাহী ও পণ্য পরিবহন) চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সরকার পরিবহন মালিক সমিতিকে ব্যবহার করে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে সমাবেশে মানুষজনের আসা বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে। তবে পরিবহন মালিক সমিতি বলছে, এটা তাদের ধারাবাহিক আন্দোলনের অংশ।
১০ দাবিতে এই ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন মালিক সমিতি। সেগুলো হলো- সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন করতে হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (নসিমন, করিমন, ভটভটি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি চলাচল বন্ধ করতে হবে। জ্বালানি তেল ও যন্ত্রাংশের অস্বাভাবিক মূল্য হ্রাস করতে হবে। করোনাকালে গাড়ি চলাচল না করায় সব ধরনের ট্যাক্স মওকুফ করতে হবে। সব প্রকার সরকারি পাওনা (ট্যাক্স, টোকেন, ফিটনেস) অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি বন্ধ করতে হবে।
চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসন করতে হবে। পরিবহনের যাবতীয় কাগজপত্রাদি বা সঠিক থাকা সত্ত্বেও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসি চলাচল অতিসত্বর বন্ধ করতে হবে। ডিপো টু ডিপো চলাচল করতে পারবে। মহাসড়কে হাট-বাজার আয়োজন বা পরিচালনা করা যাবে না। চলমান হাট বাজার অতিসত্বর উচ্ছেদ করতে হবে। যাত্রী ওঠা-নামার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ও ট্রাক ওভারলোড বন্ধ করতে হবে।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো জানান, গত শনিবার (২৬ নভেম্বর) নাটোরে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো যদি মানা না হয়। তাহলে ধর্মঘটের আওতায় থাকবে রাজশাহী, নাটোরে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও বগুড়া জেলা।
তিনি আরও বলেন, এখানে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আমাদের দাবিগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু তারা কোনও সাড়া দেয়নি। এতে ১ ডিসেম্বর ভোর ৬টা থেকে রাজশাহী থেকে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার ওরফে দুলু বলেন, মানুষজনকে কোনোভাবেই আটকে রাখা যাবে না। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আজ থেকে নেতাকর্মীরা আসা শুরু করেছেন। তারা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।