গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার রেলগেট এলাকা হইতে গত ৫ অক্টোবর বিকালে অজ্ঞাতনামা যাত্রীরা ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা নিয়ে ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া এলাকার দিকে আসে চালক মনির হোসেন। এরপর থেকে নিখোজ হয় সে। এঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করে। অপরদিকে গত বৃহস্পতিবার সকালে ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বিয়ারার একটি পুকুর থেকে এক অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ উদ্ধার করে ত্রিশাল থানা পুলিশ। অজ্ঞাতনামা মরদেহ উদ্ধারের খবরে ত্রিশাল থানায় খোজ নিতে আসে অটোরিক্সা চালক মনির হোসেনের পরিবার। তারা ওই মরদেহটি অটো চালক মনিরের মরদেহ বলে শনাক্ত করে।
মরদেহ শনাক্তের পর তদন্তে নামে ত্রিশাল থানা পুলিশ। নিহতের পরিবার, উদ্ধারকৃত স্থানের স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ও বিভিন্ন সূত্রে পাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে তারা। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে খবর আসে ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের গফাকুড়ি এলাকায় একটি অটোরিক্সা বিক্রি করা হচ্ছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মঞ্জুরুলসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষনিক অভিযান পরিচলানা করেন।
এ সময় ঘটনাস্থল থেকে প্রথমে অটো বিক্রেতা ও স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর অটো বিক্রেতাকে আটক করে পুলিশ। তারা হল জেলার নান্দাইল উপজেলার চরভেলামারী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৫) ও একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে আলম মিয়া (৩৮)।
গ্রেফতারকৃত আনোয়ার ও আলম মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, অটোরিকশাটি গত ৫ অক্টোবর শ্রীপুর থানা এলাকা হইতে ৮০০ টাকা ভাড়ায় নিয়ে আসে। তারা পরস্পর পরিচিত। পথিমধ্যে আসামী আনোয়ার ও আলম চালক মনিরকে কোকের মধ্যে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে দিলে মনির অচেতন হয়ে পড়ে। আসামী আলম গাড়ী চালিয়ে বালিপাড়া পর্যন্ত নিয়ে আসে ও রাত অনুমানিক সাড়ে ১০ টার দিকে চালক মনিরকে রাস্তার পাশে এক পুকুরে ফেলে দিয়ে তারা অটো নিয়ে চলে যায়। এ সংক্রান্তে ভিকটিম মনিরের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ত্রিশাল থানার ওসি (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য আসে একটি অটোরিক্সা বিক্রির জন্য দুইজন লোক উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের গফাকুড়ি এলাকায়। এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে একজনকে ও পরে তার জবানবন্ধী অনুযায়ী তার সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন জানান, ত্রিশালে এক পুকুরে ফেলে যাওয়া লাশের কোন পরিচয় না থাকায় ক্লুলেজ এ হত্যাকান্ডটি ত্রিশাল থানা পুলিশ অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করার ১২ ঘন্টার মধ্যে মূল দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় ওই অটোরিক্সাটি উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃত আসামীদের শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান।