ময়মনসিংহে হিসাব ছাড়া লোডশেডিংয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত

এ এক অন্যরকম ময়মনসিংহ। রুটিন অনুযায়ী লোডশেডিং হওয়ার কথা থাকলেও অঘোষিতভাবে নির্দিষ্ট সময়ের চাইতেও অনেকগুণ বেশি সময় লোডশেডিং হচ্ছে। এলাকাভেদে ২৪ ঘন্টায় মাত্র ৩-৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহের খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, সারাদেশের রুটিন ভিত্তিক লোডশেডিংয়ের ন্যায় ময়মনসিংহেও ঘোষণা দিয়ে লোডশেডিং হওয়ার কথা। তবে রুটিন অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার পরও ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছে না বিভিন্ন এলাকায়। এতবেশি পরিমাণ লোডশেডিংয়ের কারণে ২৪ ঘন্টায় কত বার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হলো তাও হিসাব রাখতে পারছে না গরমে অতিষ্ট জনসাধারণ।

ময়মনসিংহের গ্রামাঞ্চলে আগে প্রচুর লোডশেডিং হলেও এখন সেই দুর্ভোগ পৌঁছেছে শহরেও। এতে করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চিকিৎসালয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প প্রতিষ্ঠান চরম হুমকির মুখে পড়েছে। তবে এমন ভোগান্তির শেষ কবে তা কারও জানা নেই বলে দাবি সচেতন মহলের।

রটিন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলা শহরগুলোতে ঘন্টারপর ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। আর এই লোডশেডিংয়ের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন খোদ বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি এক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ময়মনসিংহ বিভাগের লাখ লাখ মানুষ অসহনীয় বিদ্যুত ভোগান্তিতে রয়েছে।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ার  কবীর আনোয়ার রিজন বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ৪-৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে। তবে দিনে দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমছেই।

ফুলবাড়িয়ার কৈয়ারচালা গ্রামের মো. আব্দুল্লাহ জানান, ২৪ ঘন্টায় মাত্র তিন-চার ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। এতে করে তার বেশ কিছু ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী নষ্ট হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ময়মনসিংহ সদরের গোহাইলকান্দির গন্দ্রপায় ২০ ঘন্টা লোড শেডিং থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মিজানুর রহমান আকন্দ।

ময়মনসিংহ সদরের শিবলী মো. শাহরিয়াজ জানান, অষ্টধার ইউনিয়নে ৭/৮ ঘন্টা লোড শেডিং হচ্ছে। এতে দুর্বিষহ হয়ে উটছে জীবন।

ফুলবাড়িয়ার বরুকা এলাকার জুলহাস উদ্দীন জানান, ২৪ ঘন্টার দশ্যে কয় ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে তার হিসাব করাই কঠিন।

এব্যাপারে ময়মনসিংহ বিদ্যুৎ বিতরণ কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ময়মনসিংহ অঞ্চলে দিনের বেলায় ৯০০ থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। এ চাহিদার বিপরীতে দিনের বেলায় উৎপাদিত হয় ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট। রাতে এ চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। রাতে উৎপাদিত হয় সর্বোচ্চ ৯৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যে কারণে ঘোষণার চেয়ে বেশি লোডশেডিং করতেই হচ্ছে।

Share this post

scroll to top