প্রথম দুই ম্যাচেই বড় হারে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে কিছুটা হতাশাই ব্যক্ত করেছেন টাইগার ক্যাপটেন মাশরাফি।
তিনি বলেন, আমাদের জন্য এটি একটি কঠিন দিন ছিল। আমরা দ্রুত উইকেট হারিয়েছি। আমাদের পার্টনারশিপগুলো ছিল ৩০-এর নিচে। এটি ৬০-এর ওপরে হওয়া উচিত ছিল। তাহলে ম্যাচটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ হতে পারত। আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা তেমন কিছুই করতে পারেননি। তবে মিঠুন আজও ভালো করেছে। মোস্তাফিজ ভারো বল করেছে। এর বাইরে এই ম্যাচে ইতিবাচক তেমন কিছু ছিল না।
মাশরাফি আরো বলেন, আসলে আমাদেরকে দল হিসেবে খেলতে হবে। আমরা ২২০-২৩০ স্কোর করছি। কিন্তু আমাদের করা উচিত ছিল ২৭০-২৮০। তাহলেই আমরা কিছুটা লড়াই করতে পারতাম।
অন্যদিকে সিরিজজয়ী দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, আজ আমাদের পারফরম্যান্স খুবই ভালো ছিল। আমাদের ক্রিকেটাররা তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেছে।
আবহাওয়ার কারণে কিছুটা অসুবিধা হলেও আমরা নিয়মিত উইকেট তুলে নিতে পেরেছি। ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় আমরা কিছু শিক্ষা নিতে পেরেছিলাম। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা শেষ দুই ম্যাচে চমৎকার খেলেছি।
গাপটিলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে চমৎকারভাবে গত ম্যাচের মোমেন্টামটিকে ধরে রাখতে পেরেছিল। ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করাটা অবশ্যই বিশেষ কিছু। আমি ব্যাট করার সময় তাকেই বেশি খেলতে দিয়েছি, এবং তা স্বাধীনভাবে। সে তা কাজেও লাগিয়েছে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নেমেছিল প্রথম ওয়ানডের একাদশ নিয়েই।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ : মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, জিমি নিশাম, টড অ্যাস্টল, লুকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে ডুনেলিনে। সেখানে অবশ্য নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামস খেলবেন না। তার জায়গায় খেলবেন কলিন মুনরো। ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করবেন টম ল্যাথাম।
দুইশর মাইলফলকে মুশফিক
এদিকে আজকের ম্যাচের মধ্যে দিয়ে অন্যরকম একটি রেকর্ডে পা রাখলেন বাংলাদেশ টিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মুশফিকুর রহীম। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের হয়ে মাঠে নেমে নিজের ২০০তম ওয়ানডে পূর্ণ করেন তিনি।
ওয়ানডেতে তার অভিষেক হয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ এ। হারারেতে ওই অভিষেক হয় তার। আজ সে মুশফিক ২০০তম ওয়ানডে খেললেন। সাফল্যের সাথেই পথ পেড়িয়ে আসছেন তিনি। উইকেট রক্ষক কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের আস্থার প্রতীকও। তার সময় টেস্ট ক্রিকেটে অনেক সাফল্য। বর্তমান সময় মুশফিক দুর্দান্ত ফর্মেও। চমৎকার পারফরম্যান্স করে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি অনেকটা অপ্রতিরোধ্যভাবেই। উইকেট কিপিং নিয়ে কথা উঠেছিল! কিন্তু মুশফিকের বিকল্প যে এখনো তৈরি হয়নি।
বাংলাদেশে এর আগে একজন ক্রিকেটার ওই মাইলফলকে যেতে পেরেছিলেন। তিনি মাশরাফি বিন মর্তুজা। এরপরই মুশফিক স্পর্শ করলেন ২০০ ওয়ানডে ম্যাচের মাইলফলক। ২০০ ম্যাচের ১৮৬ ইনিংসে করেছেন ৫৩৫৫ রান। যার মধ্যে সেঞ্চুরির সংখ্যা ৬ ও হাফ সেঞ্চুরি ৩২। গড় ৩৪.৭৪। সাফল্যের সাথে ওয়ানডে খেলে চলা এ ক্রিকেটার টেস্টেও অপরিহার্য। তার খেলা ৬৬ টেস্টের ১২৩ ইনিংসে রান এসেছে ৪০০৬ রান। তার টেস্ট ক্যারিয়ারে রয়েছে ৬ সেঞ্চুরি ও ১৯ হাফ সেঞ্চুরি। এর মধ্যে একক সর্বোচ্চ ২১৯ অপরাজিত। টি-২০ ক্রিকেটেও খেলেছেন তিনি ৭৭ ম্যাচ। সেখানেও এক হাজারের (১১৩৮) ওপরে রান তার।