প্রায় একই ধরনের স্কোর, একই ধরনের হার পরপর দুই ম্যাচে। এর ফলে সিরিজ হাতছাড়া হয়ে গেছে টাইগারদের। মাশরাফি তাই ম্যাচশেষে সবার আগে বললেন সেই কথাটাই। তিনি বলেন, আমাদের জন্য এটি একটি কঠিন দিন ছিল।
আসলে প্রথম ম্যাচে যে ভুলগুলো হয়েছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি পুরো দলই। এমনকি দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ঠিক আগের দিনের মতো রানেই (তামিম ৫, লিটন দাস ১) আউট হয়েছেন। এছাড়াও অন্য যারা যা করেছেন, এর চেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল তাদের ওপর। তারা ব্যর্থ হয়েছেন প্রায় একই রকমভাবে।
এ ব্যাপারে মাশরাফি বলেন, ‘ আমাদের পার্টনারশিপগুলো ছিল ৩০-এর নিচে। এটি ৬০-এর ওপরে হওয়া উচিত ছিল। তাহলে ম্যাচটি প্রতিযোগিতাপূর্ণ হতে পারত। আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা তেমন কিছুই করতে পারেননি।’
এ অবস্থায় প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন মোহাম্মদ মিঠুন। তার হাফ সেঞ্চুরির সহায়তায় দল ২০০ পার হয়। মিঠুনের এই খেলার উচ্ছসিত প্রশংসা করেন মাশরাফি।
টাইগারদের লোয়ার অর্ডারও তেমন কিছুই করতে পারে নি। হাসেনি মাশরাফির ব্যাটও। ছক্কা একটি মেরে আশা জাগিয়েছিলেন বটে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১৩ রানেই থেমে যান তিনি। দল থেমে যায় ২২৬ রানে। ২ বল বাকি থাকতেই পুরো দল প্যাভিলিয়ানে ফেরে।
এদিকে লো-স্কোরিং ম্যাচে বোলিংটা যেরকম হওয়া উচিত ছিল, তা দেখাতেও ব্যর্থ হয়েছে মাশরাফির বোলিং টিম। নির্বিষ বোলিংয়ে অনায়াস ব্যাট চালিয়ে গেছেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান গাপটিল দ্বিতীয় দিনেও আরেকটি সেঞ্চুরি তুলে নেন, হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কেন উইলিয়ামসন। এছাড়া রস টেইলরও ভালো ব্যাট করেন। ফলে বাংলাদেশ যেখানে ২২৬ রান তুলতে খাবি খাচ্ছিল সেখানে ৮৩ বল বাকি থাকতেই টার্গেটের চেয়ে আরো দুই রান বেশি করে ফেলে কিউইরা।
বাংলাদেশের সব বোলারকেই তারা খেলেছে স্বাচ্ছন্দ্যে। ছয়ের নিচে ইকোনমি রেট ছিল শুধু মোস্তাফিজ আর মিরাজের। মাশরাফি নিজেও ৬ ওভার বল করে ৩৭ রান দেন। মোস্তাফিজ নিউজিল্যান্ডের দুটি উইকেট নেন। এ ছাড়া আর কেউ কোনো উইকেট নিতে পারেননি। ফলে সিরিজের প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচও বাংলাদেশ হারে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে।
সব মিলিয়ে মোস্তাফিজ বলেন, মিঠুনের ব্যাটিং ও মোস্তাফিজের বোলিং ছাড়া এই ম্যাচে ইতিবাচক তেমন কিছু ছিল না।
মাশরাফি আরো বলেন, আসলে আমাদেরকে দল হিসেবে খেলতে হবে। আমরা ২২০-২৩০ স্কোর করছি। কিন্তু আমাদের করা উচিত ছিল ২৭০-২৮০। তাহলেই আমরা কিছুটা লড়াই করতে পারতাম।
অন্যদিকে সিরিজজয়ী দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, আজ আমাদের পারফরম্যান্স খুবই ভালো ছিল। আমাদের ক্রিকেটাররা তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেছে।
আবহাওয়ার কারণে কিছুটা অসুবিধা হলেও আমরা নিয়মিত উইকেট তুলে নিতে পেরেছি। ভারতের বিরুদ্ধে খেলায় আমরা কিছু শিক্ষা নিতে পেরেছিলাম। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা শেষ দুই ম্যাচে চমৎকার খেলেছি।
গাপটিলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে চমৎকারভাবে গত ম্যাচের মোমেন্টামটিকে ধরে রাখতে পেরেছিল। ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করাটা অবশ্যই বিশেষ কিছু। আমি ব্যাট করার সময় তাকেই বেশি খেলতে দিয়েছি, এবং তা স্বাধীনভাবে। সে তা কাজেও লাগিয়েছে।
সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নেমেছিল প্রথম ওয়ানডের একাদশ নিয়েই।
বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান।
নিউজিল্যান্ড একাদশ : মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, টম ল্যাথাম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, জিমি নিশাম, টড অ্যাস্টল, লুকি ফার্গুসন, ম্যাট হেনরি, ট্রেন্ট বোল্ট।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি হবে ডুনেলিনে। সেখানে অবশ্য নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামস খেলবেন না। তার জায়গায় খেলবেন কলিন মুনরো। ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করবেন টম ল্যাথাম।