মানবতাবিরোধী অপরাধের রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী শেরপুর নালিতাবাড়ীর সোহাগপুর বিধবা পল্লির শহীদ স্বজন জালাল উদ্দিন (৭৪) আর নেই।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শারীরিক অসুস্থ্যতাজনিত কারণে নালিতাবাড়ী উপজেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে হৃৎযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে, ৪ মেয়ে রেখে গেছেন।
জালাল উদ্দিন সোহাগপুর বিধবা পল্লি শহীদ পরিবার কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন। বাদ এশা সোহাগপুর বিধবা পল্লি এলাকায় জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।
নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই ভোরে পাক বাহিনী স্থানীয় আল বদর, রাজাকারদের সহায়তায় গণহত্যা চালায়। সেদিনের ৬ ঘণ্টার তান্ডবে প্রাণ হারায় ওই গ্রামের ১৮৭ জন পুরুষ, বিধবা হন ৫৭ জন নারী। সেই থেকে সোহাগপুর গ্রামের নাম পাল্টে হয়ে যায় বিধবা পল্লি।
পরবর্তীতে সোহাগপুর বিধবা পল্লির ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ডের রায় এবং ফাঁসি কার্যকর হয়। নানা হুমকি-ধামকি, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে বিধবা পল্লির ৬ সাক্ষ্যদাতার মধ্যে জালাল উদ্দিন ছিলেন অন্যতম সাক্ষী।
তার মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরো, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ‘৭১ জেলা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মওলা, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ ভট্টাচার্য, প্রেস ক্লাব নালিতাবাড়ী শাখার সভাপতি আব্দুল মান্নান সোহেল, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।