টাঙ্গাইলে শিশু শিক্ষার্থীকে হত্যায় ৯ শিক্ষক আটক

টাঙ্গাইল শহরের সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবনে শিহাব মিয়া (১১) নামের এক পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গেছে।

রবিবার (২৬ জুন) বিকেলে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. সাহাবুদ্দিন খান এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন জানান, ‘টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেয়েছি। রিপোর্টটি থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।’

এ ঘটনায় রবিবার বিকেলে র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে অধ্যক্ষসহ ৯ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে র‍্যাব কমান্ডার এএসপি এরশাদুর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‍্যাব ৭ শিক্ষককে ও সদর থানার পুলিশ দুই শিক্ষককে নিয়ে গেছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে গত ২০ জুন শহরের বিশ্বাস বেতকা সুপারি বাগান এলাকায় সৃষ্টি স্কুলের আবাসিক ভবন থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান সেখানকার শিক্ষকরা।

মৃত শিহাব মিয়া জেলার সখিপুর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামের প্রবাসী ইলিয়াস হোসেনের ছেলে। ওইদিন শিশুটিকে হত্যার অভিযোগ আনে তার পরিবার। পরে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ওই দিন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়।

এদিকে, শিহাবের মরদেহ উদ্ধারের শুরু থেকেই তার পরিবার হত্যার অভিযোগ করছিলেন। শিহাবকে হত্যার অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল শহরে একাধিক ও তার নিজ উপজেলা সখিপুরেও একাধিক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। রবিবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত টাঙ্গাইল জেলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্য এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ.এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আতাউল মাহমুদ প্রমুখ অংশ নেন।

টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছায়নি।

মৃত শিহাবের ফুফাতো ভাই আল আমিন সিকদার বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্টে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি এসেছে। এখন আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মূল অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।

অপরদিকে স্কুলের আবাসিকে শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মিডিয়ায় খবর প্রকাশে ও পুলিশের বিশেষ ভূমিকা না থাকায় মৃতের পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সচেতন মহলেও বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তবে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে থাকায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Share this post

scroll to top