নেত্রকোনা জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা হচ্ছে সুনামগঞ্জ। সুনামগঞ্জ থেকে বন্যাকবলিত এলাকার ধান ট্রলারে করে নদীপথে আসছে নেত্রকোনায়। শ্রমিকরা চলে আসা ধান তুলছে ট্রাকে। ট্রাকভর্তি ধান যাবে নেত্রকোনা জেলা শহরের মিলে। মিল থেকে চাল তৈরি করে খোরাকির জন্য কিছু নিজের এলাকায় নিয়ে যাবে, বাকিটুকু বিক্রি করে দেবে বাজারে।
সরেজমিনে দেখা যায় ,নেত্রকোনা জেলা সদরের ধলাই নদীতে ঠাকুরাকোনা ঘাটে ধান ভর্তি ট্রলারের ভিড়। নেত্রকোনা জেলার সীমান্তবর্তী সুনামগঞ্জ জেলা। সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা ধর্মপাশা, মধ্যনগর। ধর্মপাশা থেকে ট্রলারে করে নদীপথে এসেছে বেশ কয়েকটি ধান ভর্তি ট্রলার।
ঠাকুরাকোণা স্থানীয় শ্রমিক রুহুল আমিন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা বন্যা কবলিত হয়েছে। আর বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের ঘরে মজুদ শুকনো ধান। এ ধান সুনামগঞ্জ থেকে ট্রলারে করে ধলাই নদীতে নেত্রকোনা জেলা সদরের ঠাকুরাকোনা ঘাটে এসে পৌঁছেছে। সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যাকবলিত। বনলতার পানিতে ভিজে গেছে গোলায় শুকনো ধান।
সুনামগঞ্জ উপজেলার মধ্যনগরের স্বদেশ রায় ধানের মালিক জানান, এলাকায় তাদের নিজেদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। সেখানে শত শত মণ ধান কোথায় রাখবেন। চলমান বন্যায় উনার অনেক কৃষকের গোলার ধান বৃষ্টি এবং বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কেউ কেউ সেই সুনামগঞ্জের ধান নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন উঁচু এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন বাজারজাত করার জন্য। আবার কেউ কেউ সেই ট্রলার থেকে ট্রাকে করে তা নিয়ে যাচ্ছেন জেলা শহরের মিলে চাল তৈরি করার জন্য।
তিনি আরো জানান, বর্ষার মাঝামাঝি এসব ধান ওই এলাকার কৃষকরা বিক্রি করে দেন পাইকারদের কাছে। যারা এসব ধান ক্রয় করেন নৌকার মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করে থাকেন। এসব ধান নষ্ট হয়ে গেলে বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারাদেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। কারণ সুনামগঞ্জের মধ্যনগরের ওইসব এলাকার কৃষকরা যে অতিরিক্ত ধান উৎপাদন করেন তাদের খোরাকি রেখে বাকিটুকু অন্যান্য জেলা,উপজেলায় বিক্রি করে দেন।
স্থানীয় শ্রমিক কাজল দাস জানান, গত দুই তিন দিন ধরে মধ্যনগর সুনামগঞ্জ থেইকা আসা ধান আমরা মাথায় কইরা ট্রাক তুলছি। আমরারে সারা দিনে ৫০০ টেহা দিতাছে। কষ্ট কইরা কিছু টেহা কামাই আইতাছে।
ঠাকুরাকোনা ট্রলার ঘাটের সেক্রেটারি বলেছেন, সপ্তাহের শুরু থেকে প্রতিদিন শত শত মন ভেজা ধান বন্যা কবলিত এলাকা সুনামগঞ্জ, ধর্মপাশা থেকে আসতেছে। আর চলার থেকে এসব ধান চাষে তুলতে গিয়ে বস্তাপ্রতি ২০ টাকা করে দেয়া হচ্ছে শ্রমিকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ধানের মালিকরা নিজেদের সারা বছরের খোরাকি রেখে অন্যান্য জেলা -উপজেলার পাইকারদের কাছে বর্ষা শেষে বিক্রি করতো। যা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের খাবার চাহিদা মেটাত।