মুসলিম নারী-পুরুষের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। প্রতিটি নামাজ নির্ধারিত সময়ে আদায় করা আবশ্যক। নামাজের সময়ের মতো রাকাত সংখ্যায় পার্থক্য রয়েছে। তবে সব নামাজের মধ্যে ফজরের নামাজের রাকাত সংখ্যা সবচেয়ে কম; কিন্তু সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ফজরে কেবল দুই রাকাত নামাজ ফরজ। কিন্তু এই দুই রাকাত নামাজের মর্যাদা ও গুরুত্ব অন্য সব নামাজের তুলনায় বেশি। কারণ, ফজরের সময়টাতে সব মানুষ ঘুমে বিভোর থাকে। যিনি ফজর নামাজ আদায় করেন, তিনি প্রশান্তির ঘুম ও নরোম বিছানা ত্যাগ করে বড় পরাকাষ্ঠা স্থাপন করেন। মহান আল্লাহর অনুকম্পা, ক্ষমা-মার্জনা ও জান্নাত লাভের আশায় সাত-সকালে উঠে পড়েন। এই কারণে ফজরের নামাজ আদায়কে ঈমান ও নিফাকের পার্থক্য-রেখা নির্ণয় করা হয়েছে।
আর ফজরের সুন্নত সর্বাধিক গুরুত্ববহ সুন্নত। রাসুল (সা.) ঘরে-সফরে সবসময় এটি পড়তেন। ফজরের ফরজের আগে দুই রাকাত নামাজ হলো- ফজরের আজানের পর সংক্ষিপ্ত দুই রাকাত নামাজ। এই দুই রাকাত ফজরের ফরজ আদায়ের আগে পড়তে হয়। (মাউসুআতুল ফিকহিল ইসলামি, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৫৯৭)
উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, মুআজ্জিন ফজরের আজান শেষ করলে ও ফজর উদিত হলে, রাসুল (সা.) ফজরের নামাজের আগে দুই রাকাত সংক্ষিপ্ত সুন্নত পড়তেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১)
অন্য কোনো সুন্নতের চেয়ে ফজরের সুন্নত বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতময়। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) ফজরের দুই রাকাত সুন্নতের মতো অন্য কোনো নফলের প্রতি অতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন না।’ (বুখারি, হাদিস : ১১৬৩)
ফজরের সুন্নতের আরো গুরুত্ব সম্পর্কে আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের যদি ঘোড়া রেখে চলেও যায়, তবু ফজরের দুই রাকাত সুন্নত ত্যাগ করো না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১২৫৮)
রাসুল (সা.) সফরে-ঘরে কোথাও ফজরের সুন্নত ত্যাগ করতেন না কিংবা না পড়ে থাকতেন না। ফজরের সুন্নতের সওয়াব ও প্রতিদানও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।
উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে যা কিছু রয়েছে, তা থেকে উত্তম।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭২৫)