বন্যায় ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জনের মৃত্যু

বন্যায় ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার (২১ জুন) এক বার্তায় জানান, বন্যায় ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন, সিলেট বিভাগে ১৮ জন এবং রংপুর বিভাগে মারা গেছেন ৩ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ময়মনসিংহের বন্যাকবলিত এলাকায় বিভিন্ন রোগে মোট ৪৩২ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩৬ জন, কিন্তু কেউ মারা যায়নি। রংপুরে ২৯৩ জন আক্রান্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের, সিলেটে সর্বোচ্চ ৪৪২ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যুও হয়েছে সর্বোচ্চ ১৮ জনের।

প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে গত মে মাসের ১৭ তারিখ থেকে চলতি মাসের ২০ তারিখের মধ্যে।

এদিকে বন্যায় স্মরণকালের ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জে। জেলার শতভাগ মানুষই পানিবন্দি। তীব্র হচ্ছে খাবার ও নিরাপদ পানি সংকট। পুরো সিলেট অঞ্চলই বানের পানিতে ভাসছে।

এছাড়াও এক সপ্তাহ ধরে তীব্র বেগে পানি ঢুকছে সুনামগঞ্জের ছাতকে। ভারতের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের পানি বাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই উপজেলা। সড়ক ও রেললাইন বিধ্বস্ত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বানের তোড়ে ভেসে গেছে বাড়িঘর।

হবিগঞ্জেও বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার ৩ লক্ষাধিক মানুষ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসিরা। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে আজমিরীগঞ্জ বাজারের নিচু এলাকায় প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে দোকানপাট ও অর্ধশতাধিক বাড়িঘর।

এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার সাত উপজেলার আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। বন্যাকবলিত এলাকায় নিরাপদ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সিলেট বিভাগের অন্তত ৩০টি উপজেলার মানুষ ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুমিল্লায়ও ক্রমেই বাড়ছে গোমতী নদীর পানি। অব্যাহত বর্ষণে নদীতে বৃদ্ধি পাওয়া এ পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সোমবার (২০ জুন) রাত ১০টায় এ নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।

পানি বেড়ে যাওয়ায় উৎকণ্ঠার মাঝে রয়েছেন নদীর চরাঞ্চলের কৃষকরা। এরইমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় চর ডুবে যাওয়ায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিচু এলাকার বাড়িঘরে প্রবেশ করছে পানি। দুর্গাপুর উত্তর ইউনিয়নের জেলেপাড়া এলাকায় গোমতীর আইলে ফাটল দেখা দিচ্ছে। এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অঘটন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

এদিকে থৈ থৈ পানিতে ভাসছে কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা। তলিয়ে গেছে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল। দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ। ত্রাণ সহায়তার দাবি জানিয়েছেন দুর্গতরা। প্রবল স্রোতে লোকালয়ে ঢুকছে পানি। ঘরবাড়ি তলিয়ে অসহায় রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার মানুষ।

Share this post

scroll to top