মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ অধিকারের

মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ করেছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানিয়েছে, অধিকার লক্ষ্য করছে যে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম অধিকার-এর নিবন্ধন নবায়ন না করাকে কেন্দ্র করে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর সরবরাহকৃত মিথ্যা তথ্য দিয়ে অধিকার-এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করছে; যা পক্ষপাতদুষ্টতার নিদর্শন। এই ক্ষেত্রে অধিকার-এর কোনো বক্তব্য নেয়া হয়নি, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি আরো জানায়, অধিকার-এর নিবন্ধন নিয়ে যখন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশনের শুনানি চলছে তখন এনজিওবিষয়ক ব্যুরো উচ্চ আদালতের বিচারাধীন বিষয়কে পাশ কাটিয়ে অধিকার-এর নিবন্ধন নবায়নের আবেদনটি নাকচ করে দেয়; যা বিচার বিভাগের প্রতি অবমাননার শামিল। সরকার-সমর্থিত সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে লাইসেন্স ছাড়াই অধিকার সাত বছর ধরে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উল্লেখ্য, এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর নিবন্ধন তখনই প্রয়োজন হয় যখন কোনো সংগঠন বৈদেশিক অনুদান ব্যবহার করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। ২০১৫ সাল থেকে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো অধিকার-এর নিবন্ধন নবায়ন না করায় অধিকার কোনো বৈদেশিক অনুদান গ্রহণ করতে বা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর নির্দেশে অধিকার-এর সমস্ত ব্যাংক একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে অধিকার-এর মানবাধিকারবিষয়ক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়েছে। অধিকার-এর সাথে সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার কর্মীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে মানবাধিকারবিষয়ক কার্যক্রম স্বল্পপরিসরে চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, যেহেতু গত সাত বছর ধরে এনজিওবিষয়ক ব্যুরো অধিকার-এর নিবন্ধন নবায়নের বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে এবং বৈদেশিক অর্থায়নে অধিকার-এর কোনো প্রকল্প ছিল না, তাই অধিকার-এর কার্যক্রম পরিচালনার তথ্যাদি এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কাছে পাঠানো যায়নি। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর কোনো নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে না। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ এবং জাতিসঙ্ঘ নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ (আইসিসিপিআর)-এর ২২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংগঠন করা এবং স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম পরিচালনার যে অধিকার দেয়া আছে তার ভিত্তিতেই অধিকার সীমিত আকারে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া অধিকার জাতিসঙ্ঘ ইকোনোমিক এন্ড সোসাল কাউন্সিলের স্পেশাল কনসাল্টেটিভ স্ট্যাটাস পাওয়া একটি সংগঠন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদে বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন আইন, ২০১৬-এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে অধিকার তার আর্থিক লেনদেন করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। উল্লেখ্য, সংগঠনের পক্ষে অধিকার-এর কোনো সদস্যের নামে ব্যক্তিগত কোনো ব্যাংক হিসাব নেই। এছাড়াও প্রকাশিত সংবাদে অধিকার-এর বিরুদ্ধে আরো অনেক মনগড়া ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করা হয়েছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

অধিকার জানায়, অতীতেও দেখা গেছে সরকার-সমর্থিত সংবাদ মাধ্যমগুলো অধিকার এর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে এবং কুৎসা রটিয়েছে। উল্লেখ্য, সরকারপন্থী সংবাদ মাধ্যমগুলো ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় নির্বাচনের আগে, ২০১৮ সালের ১১তম জাতীয় নির্বাচনের আগে অধিকার-এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা চালিয়েছিল এবং আসন্ন ২০২৩ সালের ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একই ধরনের প্রোপাগন্ডা চালাচেচ্ছ।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে অধিকার তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকারকর্মী, ভিকটিম এবং ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়, দায়মুক্তি বন্ধে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে কাজ করে আসছে। সরকার-সমর্থিত সংবাদ মাধ্যমে অধিকার এর বিরুদ্ধে এই ধরণের মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন প্রচারণা ভিকটিম ও ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের বিচারপ্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে দেয়ার একটি হীন প্রচেষ্টা। পক্ষপাতদুষ্ট সাংবাদ মাধ্যমগুলো অধিকার-এর বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করায় অধিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

Share this post

scroll to top