বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বেগম রোকেয়া হলের এক ছাত্রী স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিজের নাম রেখেছেন আমিরা আনান। হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন তিনি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে তিনি নিজেই অভিযোগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টর বরাবর একটি আবেদনপত্রও জমা দেন ওই ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নওমুসলিম ছাত্রী আমিরা আনান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের স্নাতকোত্তর ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত এবং বেগম রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে তার নাম ছিল অঞ্জলী রাণী পাল। তার গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইলে।
আরও জানা যায়, তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছেন এক মাস আগে। গত মে মাসে তিনি জেলা ময়মনসিংহের নোটারী পাবলিক সম্মুখে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়ে এফিডেবিট করেন। তবে তার পরিবারকে ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি জানান গত ১ সপ্তাহ আগে। পরিবার বিষয়টি জানতে পারলে ওই ছাত্রীর বাবা-মা, কাকা ও বড় ভাই ক্যাম্পাসে এসে তার সাথে দেখা করতে এবং হল থেকে বাসায় নিয়ে যেতে চান। তবে ওই ছাত্রী তার পরিবারের সাথে দেখা করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন এবং পরিবার থেকে জোরপূর্বক হল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আবেদনপত্রের মাধ্যমে অবহিত করেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে নওমুসলিম ওই ছাত্রীর মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সাথে দেখা করেন এবং বেগম রোকেয়া হল প্রভোস্ট বরাবর একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগপত্রে তারা দাবি করেন, তাদের সন্তানকে জোরপূর্বক এবং কারও প্ররোচনায় ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। সেই সাথে ধর্মান্তরিত হওয়ার উপযুক্ত কারণ যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয় ওই অভিযোগপত্রে।
নওমুসলিম ছাত্রী আমিরা আনান (পূর্ব নাম অঞ্জলী রাণী পাল) জানান, আমি দীর্ঘদিন ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানার পর স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। কারও প্ররোচনায় কিংবা কারও জোরজবরদস্তিতে আমি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করি নি। বরং আমার পরিবার আমাকে এখন চাপ প্রয়োগ করছে। আমি এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাচ্ছি। তবে আমি আমার পরিবারের সাথে পূর্বের ন্যায় সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। পরিবারকে আমি ত্যাগ করতে কখনই চাই না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন বলেন, নওমুসলিম ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের সাথে আমার কথা হয়েছে। ওই ছাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদারকি করবে। পরিবার যে অভিযোগটি দিয়েছে সেটি হল প্রশাসন তদন্ত করে দেখবে।