দূর থেকে শক্রপক্ষকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ আগে থেকে চলছিল। এবার একেবারে মুখোমুখি লড়াইয়ে নামল রাশিয়া আর ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। ঘটনাস্থল পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস এলাকার সেভেরোদোনেৎস্ক শহর, যাকে যুদ্ধের বর্তমান কেন্দ্রও বলা যায়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একথা জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, সেভেরোদোনেৎস্কের রাস্তায় দুই বাহিনীর মুখোমুখি লড়াই আরো তীব্রতর হচ্ছে। আমাদের সেনাবাহিনী, আমাদের নায়কেরা অবশ্য হাল ছাড়েননি।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নজর এখন পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাসে, সেকথা সকলের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। ডনবাসের লুহানস্ক ও দনেৎস্ক প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো ইতোমধ্যেই তাদের দখলে। সেখানে সমান্তরাল প্রশাসন চালুর চেষ্টা করছে মস্কো।
লুহানস্ক প্রদেশের বিখ্যাত শিল্প শহর সেভেরোদোনেৎস্কের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে এখনো প্রতিরোধ বজায় রেখেছে ইউক্রেনের বাহিনী।
সেভেরোদোনেৎস্কের মেয়র আলেকজান্ডার স্ট্রুক জানান, এখানে ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। কিছুই বলা যাচ্ছে না।
ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, ওরা অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে ডনবাসের ইউক্রেনীয়রা লড়াইয়ের এতটুকু সুযোগ ছাড়ছেন না। সমানে সমানে টক্কর দিয়ে যাচ্ছেন।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, সেভেরোদোনেৎস্ক দখল করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না রাশিয়া। তার জন্য বিশাল বাহিনী ও সেনা সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে মস্কো। একইসাথে এইসব এলাকায় গোলাগুলি বর্ষণের তীব্রতাও বহু গুণে বেড়েছে।
ইউক্রেনের দাবি, অন্তত ২০টি বসত এলাকায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। তাদের গোলাবর্ষণে মঙ্গলবার দুই সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সেই দাবি অস্বীকার করেছে মস্কো।
প্রথম থেকেই তারা বলে আসছেন, সাধারণ মানুষ বা বসতি এলাকাকে তারা টার্গেট করছেন না। ইউক্রেন বাহিনীর হামলায় ডনবাস এলাকায় রুশ মেজর জেনারেল রোমান কুটুজোভ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আজ ডনবাসের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ডেনিস পুশিলিন সেকথা জানান। যদিও রুশ প্রশাসন সরকারিভাবে এ বিষয়ে মুখ খোলেনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ১০০ দিন পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধ থামার নাম-গন্ধ নেই। কয়েক দফা শান্তি-আলোচনা হলেও যুদ্ধ থামার মতো কিছুই ঘটেনি। এই অবস্থায় ইউক্রেন তাদের সদস্য না হওয়ায় সরাসরি কিভের পাশে দাঁড়ায়নি ন্যাটো। তাই বলে পশ্চিমা সাহায্য আটকে থাকেনি। সম্প্রতি ব্রিটেন ইউক্রেনকে বিপুল অস্ত্র সাহায্য পাঠিয়েছে। অতি আধুনিক এবং শক্তিশালী দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে আমেরিকাও। পশ্চিমা দেশগুলোকে পাল্টা বার্তা দিতে ইউক্রেনের রাজধানী কিভে সম্প্রতি ফের গোলাবর্ষণ শুরু করেছে রুশ বাহিনী।
সূত্র : আনন্দবাজার