মিয়ানমারে এক মুসলিম আইনজীবীকে হত্যার মামলায় দুই জনকে মৃত্যুদ্ণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। ২০১৭ সালে ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে তাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়।
শুক্রবার আদালতের রায়ে বন্দুকধারী কি লিন কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এছাড়া অং উইন জকেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনকারী হিসেবে। যদিও এই ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি এখনো গ্রেফতার হয়নি।
বিচারক খিন মাউং মাউং বন্দুকধারী কি লিনকে আরেক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। আইনজীবীকে হত্যা করে পালানোর সময় বাধা দেয়ায় হত্যা করা হয় ওই ট্যাক্সি ড্রাইভারকে।
এছাড়া ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত থাকার জন্য আরেক ব্যক্তিকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যিনি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রায় ৮০ হাজার মার্কিন ডলার তহবিল যোগান দিয়েছিলেন। আর ষড়যন্ত্রকারী অং উইন জ’কে আশ্রয় দেয়ার অপরাধে তার এক ভাইকেও তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে বিশিষ্ট মুসলিম আইনজীবী কো নি তার কাজ ও বিশ্বাসগত কারণে বৌদ্র জাতীয়তাবাদীদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারীতে ইয়াঙ্গুন বিমানবন্দরে প্রকাশ্যে দিবালোকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে সময় তার কোলে ছিলো নবজাতক নাতি।
হত্যাকাণ্ডের ওই সময় আইনজীবী কো নি দেশটির সেনা প্রবর্তিত সংবিধান সংশোধনে নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি ছিলেন দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চির একজন উপদেষ্টা।
এ মাসের শুরুতে মিয়ানমার যখন সেনা প্রবর্তিত সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সংসদীয় কমিটি গঠন করেছে, তার দুই সপ্তাহ পর এলো আইনজীবী কো নি হত্যাকাণ্ডের রায়।
বৌদ্ধপ্রধান দেশ মিয়ানমারে যে অল্প কিছু লোক দেশটির রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে পৌছেছেন কো নি তাদের মধ্যে একজন। সু চির দল এনএলডির সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। এছাড়া দল ক্ষমতায় আসার পর সু চির উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করতেন।
২০১৭ সালে এই হত্যাকাণ্ডটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। কো নির মৃত্যুর পর দাফন অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়ার জন্য বিশ্ব ব্যাপী সমালোচনাও হয়েছে সু চির।