সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় করা মামলায় চারজনকে ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার জামিন সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি এসএম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার অপর দুই আসামিকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলায় জামিন পাওয়া প্রধান আসামি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী মোঃ কামরুল ইসলাম সজল। জামিন পাওয়া বাকি তিন আইনজীবী হলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য কামরুল ইসলাম এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাগর হোসেন।
জামিন না পাওয়া দুই আইনজীবী হলেন আব্দুল কাইয়ুম ও নূরে আলম সিদ্দিকী। তাদের জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহ পরে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মুহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরোদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভুইয়া। এ সময় বিএনপি’র শতাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে, গত ১৮ মে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইদিন দুই পক্ষের হাতাহাতিতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সমর্থিত অ্যাডভোকেট মোঃ নজরুল ইসলাম (এনআই) প্রামাণিক গুরুতর আহত হন। পরে ওই দিনই সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হাসান হাতাহাতির ঘটনায় বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৮ মে সমিতির প্রধান ফটকে প্রতিবাদ সভার নামে বেআইনি সমাবেশ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। ওই সমাবেশ থেকে গাজী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কিছু আইনজীবী ও বহিরাগত ব্যক্তি (আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ জন) দেশীয় অস্ত্রসহ নিয়ে সম্পাদকের কক্ষে এবং জানালায় হামলা করেন।
সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক পদ দখলের অভিযোগ তুলে ওই দিন বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে বারের দ্বিতীয় তলায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে মারামারি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।