ডাক ও টেলিযোগাযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির অহংকার। অসুস্থ কবিকে বাংলাদেশে এনে এবং তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাত্র কয়েক মাস পর ২৪ মে ভারতের একজন নাগরিককে বাংলাদেশে এনে নাগরিকত্ব প্রদান করা বঙ্গবন্ধুর মতো একজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পরাক্রমশালী রাজনৈতিক ও রাষ্ট্র নায়কের পক্ষেই সম্ভব ছিল বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার (২৪ মে) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাংলাদেশে আনার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর হুমায়ুন কবীর বক্তৃতা করেন।
বাঙালি কোনো দুর্বল জাতি না এবং বাংলা কোনো দুর্বল ভাষা না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধু, নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ আছেন। বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র ভাষা ভিত্তিক রাষ্ট্র। পৃথিবীর ৩৫ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। অসমীয়া ভাষাসহ অনেক ক্ষুদ্র নৃজাতি-গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় বাংলা লিপি ব্যবহৃত হওয়ায় বাংলা ভাষার যে পরিধি তার চেয়ে বেশি বাংলা লিপির পরিধি ব্যাপৃত বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা বর্ণমালার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার।
ত্রিশালে জাতীয় কবি নজরুলের নামে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্ম ইতিহাস তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৮ সালের ১৪ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত প্রদানের মধ্য দিয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ তৈরি করে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবির সঙ্গে যুক্ত থাকা আমরা চেয়েছিলাম, এটিকে একটি পরিপূর্ণ সংস্কৃতি ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলবো। এখানে নজরুল চর্চা প্রাধান্য পাবে কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়টি হবে বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। একই সঙ্গে এটি হবে দেশের অন্যতম সেরা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়কে ত্রিশালে কাজী নজরুলের স্মৃতির সম্মানের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর যার যা জমি ছিল তা দিয়ে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের অবদান গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, যারা এখানে লেখাপড়া করছো এবং ভবিষ্যতে যারা পড়বে তাদের প্রতি আমার অনুরোধ তোমরা তাদেরকে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখবে-সম্মান করবে।
মন্ত্রী সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত নজরুল থেকে বঙ্গবন্ধু শীর্ষক আলোকচিত্রসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন এবং এ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত বই ও স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে দেখেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ডিজিটেইজেশনে সম্ভাব্য সব ধরণের সহয়োগিতা প্রধানের আশ্বাস দেন।
এর আগে মন্ত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক প্রীতিকুমার মিত্র এবং বিশিষ্ট শিল্পী সুজিত মোস্তাফাকে নজরুল পদক হস্তান্তর করেন। কবি নূরুল হুদা জয় বাংলা শ্লোগান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি উপস্থাপন করে বলেন, জয় বাংলা জাতীয় চেতনাকে উজ্জীবিত করেছে বহ্নি শিখার মতোই। তিনি নজরুল যে কবিতায় জয় বাংলার জয় শব্দমালা উল্লেখ করেন তারও বিশদ বিবরণ প্রদান করেন।