নিজেকে উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি পরিচয় দিয়ে ঢাকা থেকে একটি গাড়ি ভাড়া নিয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় রওনা দেন মো. বিপ্লব প্রধান (৪০)। পথে বিভিন্ন জায়গায় বিচারপতির প্রটোকল ও সুবিধাও নেন। কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকায় পৌঁছালে সেখানকার ট্রাফিক পুলিশের কাছেও নিজেকে বিচারপতি হিসেবে পরিচয় দেন।
পরে কুমিল্লা পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ (কন্ট্রোল রুম) থেকে মুঠোফোনে মতলব দক্ষিণ থানার পুলিশকে জানানো হয়, সেখানে একজন বিচারপতি যাচ্ছেন। এরপর পুলিশ বিপ্লব প্রধানকে প্রটোকল দিয়ে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেন। সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ জানতে পারে, বিপ্লব প্রধান ভুয়া বিচারপতি। পরে সেখান থেকে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর দিঘলদী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আটক বিপ্লব প্রধান উত্তর দিঘলদী গ্রামের মৃত মাহাবুব প্রধানের ছেলে। বিপ্লব উপজেলা সদরের কলেজ গেট এলাকায় একটি গ্রিল ও আলমারি তৈরির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, আজ সকাল সাড়ে ৯টায় কুমিল্লা পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে কল করে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের একজন বিচারপতি দাউদকান্দি হয়ে গাড়িতে করে উপজেলার উত্তর দিঘলদী গ্রামে তাঁর বাড়িতে যাচ্ছেন। বিচারপতিকে প্রয়োজনীয় প্রটোকল দেওয়ার জন্য জানানো হয়। এরপর দাউদকান্দি থেকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার সীমানায় পৌঁছালে তাঁকে বিচারপতির প্রটোকল দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ওই গাড়ির চালক গাড়ি নিয়ে অন্যত্র চলে যান।
মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, থানার পুলিশ কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, মো. শামসুদ্দিন, আবুল ফজল ও মো. হেলাল উদ্দিন ওই ব্যক্তিকে প্রটোকল দেন। পুলিশ কর্মকর্তারা ওই ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে বসতঘরের অবস্থাসহ অন্যান্য বিষয় দেখার পর তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে এ নিয়ে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি নিজেকে ভুয়া বিচারপতি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এরপর সেখানেই তাঁকে আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে এখনো মামলা হয়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার কলেজ গেট এলাকার একাধিক দোকানি বলেন, বিপ্লব প্রধান মজা করে এর আগেও এ রকম ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিপ্লব প্রধান মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ বলেও তাঁরা দাবি করেন।